হংকং বিক্ষোভে বিপজ্জনক মোড়, বিমান ওঠানামা বন্ধ
সরকারবিরোধী হাজার হাজার বিক্ষোভকারীরা গত চারদিন ধরে হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মূল টার্মিনালের দখল নেওয়ার পর কর্তৃপক্ষ ওই বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা স্থগিত করেছে। বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত এ বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষ সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতি বলা হয়, অব্যাহত বিক্ষোভের কারণে বিমানবন্দরের কাজ সাংঘাতিকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে চেক-ইন সম্পন্ন করেছে এমন ফ্লাইট ছাড়া সমস্ত ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে যাত্রীদের বিমানবন্দরে না যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দর। ২০১৮ সালে এ বিমানবন্দর দিয়ে সাড়ে সাত কোটি যাত্রী যাতায়াত করেছে। মাস দুয়েক আগে মূল চীনা ভূখণ্ডে বন্দি প্রত্যর্পণ সম্পর্কিত প্রস্তাবিত একটি আইনকে কেন্দ্র করে সরকার বিরোধী যে বিক্ষোভ হংকংয়ে শুরু হয়েছে তা দিন দিন সহিংসতার রূপ নিচ্ছে।পুলিশ এবং বিক্ষোভকারী - দুপক্ষই দিনকে দিন মারমুখী হয়ে উঠছে।
রোববার (১১ আগস্ট) হংকংয়ের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের তুমুল সংঘর্ষ হয়। সে সময় পুলিশ রাবার বুলেট ছুঁড়েছে। অন্যদিকে শহরের কেন্দ্রে ওয়ান চাই এলাকায় বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল এবং পেট্রলবোমা ছুঁড়ছে।
এদিকে হংকংয়ে এ পরিস্থিতিতে সরাসরি নাক গলায়নি চীন। তবে সোমবার বিক্ষোভকারীদের প্রসঙ্গে বেইজিং কড়া এক বিবৃতি জারি করেছে। চীনের হংকং এবং ম্যাকাও অফিসের মুখপাত্র ইয়াং গুয়াং এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সন্ত্রাসী তৎপরতার লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করেছে।
তিনি বলেছেন, হংকংয়ের উগ্রপন্থী বিক্ষোভকারীরা বিপজ্জনক বস্তু দিয়ে পুলিশকে আক্রমণ করা শুরু করেছে। এগুলো বড় ধরনের অপরাধ। এখন সন্ত্রাসী তৎপরতার লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করেছে। হংকংয়ে আইনের শাসন এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা পদদলিত করা হচ্ছে।
কেন এ বিক্ষোভ
বন্দি প্রত্যর্পণ সম্পর্কিত প্রস্তাবিত একটি আইনের প্রতিবাদে জুনে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়, চীনে কোনো অপরাধ করে হংকংয়ে পালিয়ে আসা সন্দেহভাজন অপরাধীকে বিচারের জন্য চীনে পাঠানো যাবে।
হংকংয়ের গণতন্ত্র-পন্থীদের বক্তব্য- এ আইন হলে চীন তা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে।
বিক্ষোভের মুখে হংকং প্রশাসন বিলটি স্থগিত করে। তবে বিক্ষোভকারীরা দাবি করছে প্রস্তাবিত আইনটি পুরোপুরি বাতিল ঘোষণা করতে হবে।
হংকং চীনের একটি ভূখণ্ড হলেও সেখানকার অধিবাসীরা চীনের মূল ভূখণ্ডের চেয়ে অনেক স্বাধীনতা ভোগ করে। সেখানের গণমাধ্যম এবং বিচার ব্যবস্থাও স্বাধীন।তবে হংকংয়ের নাগরিকদের মধ্যে দিনকে দিন ভয় ঢুকছে তাদের এ স্বাধীনতা ধীরে ধরে হরণ করা হচ্ছে। সূত্র- বিবিসি
আরএস/পিআর