নেদারল্যান্ডসে বোরকা নিষিদ্ধ
স্কুল, হাসপাতাল, সরকারি স্থাপনা এবং গণপরিবহনে মুসলিম নারীদের বোরকা পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে নেদারল্যান্ডস। এই বিতর্কিত আইন পাস করা আরো কিছু ইউরোপীয় দেশের তালিকায় যোগ দিলো দেশটি। অনেকে মনে করেন বোরকা নারী নিপীড়নের প্রতীক, আবার কেউ কেউ এমন সিদ্ধান্তকে দেখছেন ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবে।
ইউরোপের এই দেশে বৃহস্পতিবার থেকে বোরকা নিষিদ্ধের আইন কার্যকর হয়েছে। ২০০৫ সালে প্রথম এই আইনের প্রস্তাব করা হয়, ব্যাপক তর্ক-বিতর্ক ও আলোচনার পর ২০১৫ সালে আইনটি পাস হয়। ২০১৮ সালের জুনে দেশটির সিনেট এ আইনের অনুমোদন দেয়।
কেউ বোরকা পরে এসব স্থানে ঢুকতে চাইলে কর্তৃপক্ষ তাদেরকে মুখ দেখাতে বলতে পারবেন। এতে আপত্তি জানালে তাদের সেসব স্থানে ঢুকতে দিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। নির্দেশ অমান্য করলে ১৫০ ইউরো (প্রায় ১৫ হাজার টাকা) জরিমানাও করা হতে পারে।
শুধু বোরকা নয়, পুরো মুখ ঢাকা হেলমেট বা বালাক্লাভার ক্ষেত্রেও এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য। এই আইন কার্যকরের আগেই ব্যাপক বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছে। বেশ কয়েকটি শহর কর্তৃপক্ষ, হাসপাতাল, গণপরিবহন সংস্থা এমনকি পুলিশও এই আইন বাস্তবায়নে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
ইউরোপ জুড়ে বিধিনিষেধ
ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে ফ্রান্স প্রায় ১০ বছর আগে মুখ ঢাকা পোশাক নিষিদ্ধ করে। গত বছর জাতিসংঘের একটি কমিটি এই আইন মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে বলে মত প্রকাশ করলেও ফ্রান্স তার অবস্থান থেকে সরে আসেনি।
এরপর ফ্রান্সের অনুসরণে অনেক দেশেই চালু করা হয় এমন আইন। ব্যাপক বিরোধিতা সত্ত্বেও ডেনমার্কে এক বছর ধরে চালু রয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা। চলতি বছরের শুরুতে অস্ট্রিয়া প্রাইমারি স্কুলে মুসলিম মেয়েদের মাথা ঢাকার স্কার্ফ নিষিদ্ধ করে আইন পাস করে। ২০১৭ সাল থেকে দেশটিতে মুখ ঢাকা পোশাকে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কর্মরত অবস্থায় এমন পোশাক পরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে জার্মানির রাজ্য হেসেতেও। ছয় মাস আগে উত্তর জার্মানির কিয়েল বিশ্ববিদ্যালয় পুরো মুখ ঢাকা কোনো পোশাক পরে আসার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে মুখভঙ্গি গুরুত্বপূর্ণ, এমন যুক্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে বেশ কিছু রাজনীতিবিদ ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার কারণে সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন। ডিডব্লিউ।
এসআইএস/এমকেএইচ