প্রবাসীদের জন্য সৌদিতে নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ
তেল নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে অর্থনৈতিক অগ্রগতির লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারে কাজ করছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম কট্টরপন্থী দেশ সৌদি আরব। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে এই সংস্কারযজ্ঞ চলছে; যার নাম দেয়া হয়েছে ভিশন-২০৩০।
অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এবার ধনাঢ্য ও সম্পদশালী প্রবাসীদের টানতে একটি বিশেষ আবাসন প্রকল্প চালু করেছে সৌদি আরব। রোববার থেকে চালু হওয়া প্রকল্পকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ডের অনুরূপ হিসেবে বলা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সৌদি আরবের নাগরিকত্ব পাবেন ধনী প্রবাসীরা।
অনলাইনে এ জন্য আবেদনগ্রহণ শুরু করেছে সৌদি আরব। সেখানে বলা হয়েছে, কেউ যদি সৌদি আরবে স্থায়ী নাগরিকত্ব পেতে চান তাহলে একবারে ৮ লাখ সৌদি রিয়াল (বাংলাদেশি এক কোটি ৭৮ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬ টাকা) ফি পরিশোধ করতে হবে। এক বছরের, তবে নবায়নযোগ্য আবাসিকতার জন্য দিতে হবে এক লাখ রিয়াল (বাংলাদেশি ২২ লাখ ৬৫ হাজার ৮৫৩ টাকা)।
আরও পড়ুন : পুকুরে ইলিশ চাষ করে দেখিয়ে দিলেন তিনি
ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এই প্রকল্প অনুযায়ী প্রবাসীরা কোনো ধরনের স্পন্সর ছাড়াই সৌদিতে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা, সম্পত্তি ক্রয় ও স্বজনদের জন্য স্পন্সর ভিসা নিতে পারবেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে সম্পদশালী আরব বংশোদ্ভূত ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ব্যাপকভাবে লাভবান হবে; যারা স্থায়ী আবাসন ছাড়াই বছরের পর বছর ধরে সৌদি আরবে বসবাস করে দীর্ঘমেয়াদে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করতে চান।
তেল নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে অর্থনৈতিক বৈচিত্রতা আনতে সৌদি আরব নতুন এই প্রকল্প চালু করলো। গত মাসে দেশটির মন্ত্রিসভায় নতুন এই প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হলেও অনলাইনে আবেদনগ্রহণ শুরু হয়েছে রোববার।
মধ্যপ্রাচ্যের রক্ষণশীল এই দেশটিতে বর্তমানে প্রায় এক কোটি প্রবাসী শ্রমিক রয়েছে। শ্রমিক মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, দেশটিতে বিভিন্ন ধরনের নিয়ম-নীতির বেড়াজালের মাঝেই বসবাস করছেন শ্রমিকরা। প্রবাসী শ্রমিকরা সাধারণত দেশটিকে সৌদি আরবের একজন নিয়োগকর্তার স্পন্সরে কাজ করেন। দেশত্যাগ এবং সৌদিতে ফেরার জন্য ভিসা পেতেও স্পন্সরের অনুমতি প্রয়োজন।
আরও পড়ুন : ভালোবেসে নয়, ফ্রি খেতেই পুরুষের সঙ্গে ডেটে যান নারীরা
তবে জীবন-যাপনের ব্যয় ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদেশি শ্রমিকদের সৌদি ত্যাগের ঢল দেখা গেছে। প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য কয়েকটি খাত নির্দিষ্ট করে কর্মক্ষেত্র সীমিত করায় ও অতিরিক্ত ফি আরোপের কারণে এই ঢল শুরু হয়।
এছাড়া সৌদি সরকার অবৈধ শ্রমিকদের ধরতে কঠোর অভিযান পরিচালনা করছে; যে কারণে গত দুই বছরে কয়েক লাখ অবৈধ শ্রমিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
সূত্র : এএফপি।
এসআইএস/পিআর