দক্ষিণ চীন সাগরে একাধিক যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
চীনকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে দক্ষিণ চীন সাগরে দুটি যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল বলছে, নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের অংশ হিসেবে সোমবার বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের এসব যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর ঘটনায় বেশ ক্ষুব্ধ হয়েছে বেইজিং।
ট্রাম্প প্রশাসন চীনের ওপর চাপ বাড়াতেই যুদ্ধ জাহাজ পাঠালেও তাদের সেই পদক্ষেপে ভীত নয় বেইজিং৷ তারা এর উপযুক্ত জবাব দেয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে। উল্লেখ্য, তাইওয়ানের ওপর দখলদারি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এই সংঘাত চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব রয়েছে স্বায়ত্তশাসিত তাইওয়ানের। অন্যদিকে, ভৌগোলিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরকে নিজেদের অধীনে রাখতে চায় চীন। তাই সাগরে তারা কৃত্রিম দ্বীপও বানিয়েছে।
আরও পড়ুন>> ইরানকে মোকাবিলায় মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ
তাইওয়ানকে নিজেদের আয়ত্তে আনতে পারলে দক্ষিণ চীন সাগরে আধিপত্য বিস্তারের কাজটি সহজ হবে চীনের জন্য। তাই ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ‘শীতল যুদ্ধ’ চলছে। যুক্তরাষ্ট্র সেই পরিস্থিতিতে নিজেদের আধিপত্য দেখাতেই যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে বলে ধারণা সামরিক বিশ্লেষকদের।
মার্কিন সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ক্লে ডস জানিয়েছেন, দক্ষিণ চীন সাগরের গাভেন ও জনসন প্রবাল প্রাচীর থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল দূরে রয়েছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলো৷ আন্তর্জাতিক জলসীমা আইন লঙ্ঘন না করেই প্রয়োজনে এসব যুদ্ধজাহাজ নিজেদের কাজ করবে বলে জানিয়েছেন তিনি৷
বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং শুয়াং বলেন, মার্কিন যুদ্ধজাহাজ কোনো নির্দিষ্ট নোটিশ ছাড়াই এই জলসীমায় প্রবেশ করেছে৷ চীনা নৌবাহিনী তাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ফিরে যাওয়ার জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের এমন আচরণে চীন রীতিমতো ক্ষুব্ধ বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন>> মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন রণতরী কী ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি?
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে যেকোনো ধরনের উসকানির চূড়ান্ত জবাব দেয়া হবে৷ হেগের আন্তর্জাতিক আদালত দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে বেজিংয়ের দাবির বিপরীতে রায় দেয়ার পর চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নতুন করে এই হুঁশিয়ারি দেয়।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘যদি কেউ হেগের আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের ভিত্তিতে চীনের নিরাপত্তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের উস্কামিূলক তৎপরতায় চালায় তাহলে বেইজিং তার চূড়ান্ত জবাব দেবে।’
দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় সম্পূর্ণটার মালিকানা দাবি করে আসছে চীন। তাছাড়া সাগরের কিছু অংশের দাবি করে আসছে তাইওয়ান, ব্রুনাই, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইন। সাগরের বিরোধপূর্ণ জলসীমায় প্রচুর পরিমাণে তেল ও গ্যাসের মতো মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
ফিলিপাইনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালতের কোর্ট অব আরবিট্রেশন এক রায়ে দক্ষিণ চীন সাগরের একটি অংশের মালিকানা ম্যানিলাকে দেয়। সেই রায়ের পরপরই চীন বলে, বেইজিংয়ের কাছে এই রায়ের কোনও মূল্য নেই।
এসএ/পিআর