হামলার ১০ দিন আগেই হামলাকারীদের নাম জানিয়েছিল ভারত
শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডেতে সিরিজ বোমা হামলার ১০ দিন আগেই দেশটিকে সতর্ক করেছিল ভারত। এ বিষয়ে শ্রীলঙ্কাকে বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র আত্মঘাতী হামলা সম্পর্কেই সতর্ক করা হয়নি বরং ওই হামলার পেছনে দায়ী গোষ্ঠী, এর নেতা এবং অন্যান্য সদস্যদের সম্পর্কেও তথ্য জানানো হয়েছিল।
গত রোববার ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় তিনটি গির্জা, তিনটি হোটেল এবং আরও দু'টি স্থানে ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৫৯ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে আরও পাঁচ শতাধিক মানুষ।
ভয়াবহ ওই হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ৬০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিন পাতার একটি নথিতে সম্ভাব্য হামলা সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিল ভারত। ওই নথি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, হামলাকারী গোষ্ঠীর নাম ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত। ওই সংগঠনের নেতাদের নাম, গোপন আস্তানা এবং ফোন নম্বরও দেয়া হয়েছিল।
১১ এপ্রিলের তিন পাতার ওই নথিতে একাধিক গির্জা ও ভারতীয় দূতাবাসকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। এরকম খবর পাওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
এনডিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংঘে বলেন, ভারতের কাছ থেকে গোয়েন্দা রিপোর্ট পাওয়ার পরেও তা প্রশাসনের সবস্তরে জানানো হয়নি। বড় ধরনের গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছে দেশটির সরকার।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা জানিয়েছেন, সম্ভাব্য হামলা সম্পর্কে তাকে কিছু জানানো হয়নি। সঠিকভাবে তথ্য না জানানোয় এবং আসন্ন হামলা রুখতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটির প্রতিরক্ষা সচিব ও পুলিশ প্রধানকে সরিয়ে দেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রোববারের ওই ভয়াবহ হামলায় জড়িত নয়জনের মধ্যে আটজনই শ্রীলংকার নাগরিক। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট। এ বিষয়ে তদন্ত করছে সরকার।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, আমাদের এই হামলার দায়িত্ব নিতেই হবে কারণ যে সতর্কবার্তা পাওয়া গিয়েছিল তা সঠিকভাবে যথাযথ ব্যক্তিদের জানালে এ ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হতো বা কমপক্ষে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যেত।
শ্রীলংকার সংসদের নেতা লক্ষ্মণ কিরিয়েলা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইচ্ছাকৃত ভাবেই সম্ভাব্য হামলার খবর ঝুলিয়ে রেখেছিল। গোয়েন্দা সংস্থার কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইচ্ছা করেই এসব তথ্য গোপন করেছেন। তথ্য থাকার পরেও কর্মকর্তারা সঠিকভাবে এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
টিটিএন/জেআইএম