সৈন্যদের টেলিপ্যাথির প্রশিক্ষণ দিচ্ছে রাশিয়া
রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিশেষ ফোর্সকে যুদ্ধের অসাধারণ ও অত্যন্ত শক্তিশালী বৈজ্ঞানিক কৌশল ‘টেলিপ্যাথি’র প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। গত শুক্রবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাইনিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ম্যাগাজিন আর্মেইস্কাই স্বর্নিকে (আর্মি ডাইজেস্ট) এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, যুদ্ধে শত্রুদের পরাভূত করতে সৈন্যদের প্রচলিত যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিবর্তে বিশেষ ধরনের কৌশল শেখানো হচ্ছে। এই বিশেষ কৌশলকে বলা হচ্ছে, প্যারানসাইকোলজিক্যাল স্কিল, যা বিগত সময়ে চেচনিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকর ছিল বলে নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে।
বলা হয়ে থাকে, প্যারা সাইকোলজিতে যদিও অলৌকিক ঘটনা বা ক্ষমতা নিয়ে কাজ করা হয় তবে সেটা হয় পুরোপুরি বিজ্ঞানসম্মতভাবেই। আর টেলিপ্যাথি হলো আগে থেকেই কোনো কিছু ধারণা করে নেয়া বা ভবিষ্যত দেখতে পাওয়া। কিংবা বলা যেতে পারে কোনো ধরনের শারীরিক সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই কোনো জিনিস নাড়াতে পারা বা কোনো বস্তুকে স্পর্শ করে সেটা সম্পর্কে সব বলতে পারা, মৃত্যু স্পর্শ বা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার অভিজ্ঞতা।
টেলিপ্যাথির সাহায্যে শত্রুর গোপন ভাষাও বুঝতে সক্ষম হবেন সৈন্যরা। এর মাধ্যমে যুদ্ধাহত সহকর্মীদের বেদনা বোঝা ও শত্রুপক্ষের গোপন অস্ত্র ভাণ্ডারের তথ্যও জানা যাবে। এমনকি এই পদ্ধতির মাধ্যমে মুখে কথা না বলেও দূর থেকে ইশারা-ইঙ্গিতে দিকনির্দেশনা দিতে পারবেন সৈন্যরা-এমনটাই দাবি করা হয়েছে ওই নিবন্ধে।
ম্যাগাজিনটি বলছে, টেলিপ্যাথির প্রশিক্ষণ নেয়া সৈন্যরা শত্রুপক্ষের সৈন্যদের দিকে তাকিয়ে বুঝে নিতে পারবেন তারা কোন প্রকৃতির, তাদের দূর্বলতা কোন জায়গায় এবং তাদের মধ্যে কারা স্পাই হিসেবে কাজ করছে-সবই বুঝতে সক্ষম হবেন সৈন্যরা।
ম্যাগাজিনটি আরও জানিয়েছে, যেসব সৈন্যরা টেলিপ্যাথির প্রশিক্ষণ নেবেন তারা সেইসব গোপন তথ্য উদ্ধার করতে পারবেন-তা যতই সুরক্ষিত থাকুক না কেন। কল্পনাশক্তির শক্তির জোরে কম্পিউটারের প্রোগ্রাম বন্ধ করে দেয়া যাবে, আগুন ধরিয়ে দেয়া যাবে। শত্রুপক্ষের কথোপকথন শুনতে পারবেন সৈন্যরা। এমনকি মুহূর্তের মধ্যে রেডিও ও টেলিকমিউনিকেশন ব্যবস্থা ধ্বংসও করে দিতে সক্ষম এই টেলিপ্যাথি পদ্ধতি।
তবে এ ধরনের কৌশলকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলছেন রাশিয়ান অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস কমিটি ফর কমব্যাটিং ফলস সায়েন্সের সভাপতি ইয়েগজেনি আলেকসান্দ্রোভ। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম আরবিকে-কে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে গবেষণা অতীতে হয়েছে কিন্তু সেটি ছিল গোপনীয়। এখন এটা আবার আলোচনার মুখ দেখল। তবে এ ধরনের গবেষণার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।’
এসআর/এমকেএইচ