মিসরে সমাধিক্ষেত্রে ইঁদুর-বিড়াল-পাখির মমি
মিসরে সমাধিক্ষেত্রের ভেতরে আবিষ্কৃত বেশির ভাগ মমিই সাধারণত হাজার বছর আগের অভিজাত পরিবারের মানুষের ও তাদের সহচর বা কর্মকর্তাদের। কিন্তু এবার মিসরে নতুন আবিষ্কৃত এক ‘সুসজ্জিত’ প্রাচীন ‘নেক্রোপলিস’ বা সমাধিক্ষেত্রের ধ্বংসাবশেষের ভেতরে একটি কবরের মধ্যে পাওয়া গেছে মমি করা কয়েকটি ইঁদুর, বিড়াল এবং পাখি।
মিসরের সোহাগ শহরে ওই সমাধিতে উদ্ধার হওয়া ইঁদুর ও আরো কয়কটি প্রাণীর মমিগুলো দু’জন মানুষের মমির পাশে ছিল এবং সমাধিস্তম্ভের মধ্যে শেষকৃত্যের বিস্তারিত অংকন করা চিত্রকর্মও পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সমাধিটি দুই হাজার বছরের বেশি পুরনো এবং ধারণা করা হচ্ছে মমি দু’টি তৎকালীন রাজপরিবারের সিনিয়র কর্মকর্তা টুটু ও তার স্ত্রীর।
অক্টোবরে অবৈধভাবে চোরাকারবারিরা এই সমাধি খনন করার সময় এটি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। মিসরের কর্তৃপক্ষ অ্যান্টিকস বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আশা কায়রোর কাছে মরুভূমির মধ্যে আবিষ্কৃত এই সমাধি হয়ত নতুন করে এখানে পর্যটক আকর্ষণ করবে।
প্রত্মতত্ত্ব বিভাগের কর্মকর্তা মোস্তফা ওয়াজিরি জানিয়েছেন, সমাধিক্ষেত্রটি খুব সুন্দর ও রঙ্গিন। ২০১১ সালে দেশটিতে আরব বসন্তের পর কায়রোর কাছে এই সমাধিক্ষেত্রগুলো আবিষ্কার হওয়াকেই সবচেয়ে বড় ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
সমাধিক্ষেত্রের বাইরে একজন নারী ও এক কিশোরের মমি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। মমি করা নারীর বয়স মৃত্যুর সময় ৩৫ থেকে ৫০ বছর ছিল এবং কিশোরটির বয়স মারা যাওয়ার সময় ছিল ১২ থেকে ১৪ বছর ছিল।
২০১৮ সালে আবিষ্কার হওয়া প্রাচীন নেক্রোপলিস বা সমাধিক্ষেত্রের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে পাওয়া গেছে বহু মমি, পাথরের তৈরি শবাধার ও অন্যান্য সামগ্রী এবং একটি গলার হার। বলা হচ্ছে এটি হলো মৃত্যুর পরের জীবন থেকে পাঠানো বার্তা।
সমাধির ভেতরে অন্তত ৫০টি মমি করা ইঁদুর, বিড়াল এবং পাখি পাওয়া গেছে। আর মূল্যবান সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে দুর্লভ চিত্রকর্ম এবং নানারকম উৎসবের রঙ্গিন মুখোশ। কায়রোর দক্ষিণে মিনিয়া শহরের কাছে এই পুরো প্রত্নস্থানটি এতই বড় যে তা পুরোপুরি খনন করতে পাঁচ বছর লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কয়েকটি পাত্র পাওয়া গেছে যাতে মৃতদের দেহের ভেতরের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ মমি করে রাখা আছে। ওপরে লেখা আছে তাদের নাম ও পদ। এগুলো দেখতে হোরাস নামে এক প্রাচীন দেবতার চার পুত্রের মুখের মতো।
টিটিএন/এমএস