নিরাপদ পানির জন্য গরিবদের ব্যয় বেশি
পরিষ্কার ও নিরাপদ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত বিশ্বের ২০০ কোটিরও বেশি মানুষ। আর এই সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ভোগেন গরিব ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী৷ সম্প্রতি ইউনেস্কোর ‘লিভিং নো ওয়ান বিহাইন্ড (কাউকে পেছনে ফেলে নয়)’ শিরোনামের এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে৷
জাতিসংঘের ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট-২০১৯' নামের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের ২১০ কোটি মানুষ নিরাপদ ও পানযোগ্য পানির প্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত৷ এমনকি ৪৩০ কোটি মানুষ এখনও স্যানিটেশন সুবিধা পায় না, যা দারিদ্র্য হ্রাসের পথে অন্তরায় বলে মনে করে ইউনেস্কো৷
সংস্থাটির মতে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন সুবিধার প্রাপ্যতা দারিদ্র্য দূরীকরণ, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সমাজ সেই সঙ্গে টেকসই উন্নয়নের জন্য অত্যাবশ্যক।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামীর পৃথিবীতে পানির সঙ্কটে পরিবেশগত বিপর্যয় ঘটবে। সেই সঙ্গে পানির অভাবে ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ৪৫ ভাগ এবং বিশ্বের শস্য উৎপাদনের ৪০ ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতিতে।
ইউনেস্কোর ওই প্রতিবেদনের প্রধান সম্পাদক রিক কনোর বলেন, ‘ধনীরা অপেক্ষাকৃত কম খরচে পাইপের মাধ্যমে বাসায় পানির সুবিধা পান৷ অথচ বস্তিতে বসবাসরতদের তা ১০ থেকে ২০ গুণ বেশি দামে ট্রাক কিংবা বিক্রেতাদের কাছ থেকে কিনতে হয়৷
থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে তিনি বলেন, ‘একটি ধারণা রয়েছে যে, গরিব লোকেরা পানির সুবিধা পায় না, কেননা তাদের পক্ষে এর খরচ বহন সম্ভব হয় না৷ ধারণাটি পুরোপুরি ভুল৷’
প্রতিবেদন অনুযায়ী, পর্যাপ্ত পানযোগ্য নিরাপদ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত বিশ্বের অর্ধেক জনগোষ্ঠীরই বসবাস আফ্রিকা মহাদেশে৷ এরমধ্যে সাব সাহারা আফ্রিকায় নিরাপদ পানির সুবিধার আওতায় আছেন মাত্র ২৪ ভাগ মানুষ৷
এ বিষয়ে জার্মানির সোশাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য উলা বুরশার্ডট বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের এই সমস্যার জন্য আমরাও কিছুটা দায়ী৷ বিশেষ করে তুলা বা মাংস আমদানির প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করলে, যা উৎপাদনে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়৷ নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন দুটোই মানুষের অধিকারের মধ্যে পড়ে৷ কিন্তু কয়েকশ' কোটি মানুষের সেই অধিকারের স্বীকৃতি নেই৷’
এমএমজেড/জেআইএম