সৌদি বাদশাহ-যুবরাজের সম্পর্কে ফাটলের গুঞ্জন
সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গে তার ছেলে এবং রাজপরিবারের উত্তরাধিকার, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। মঙ্গলবার গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদির অংশগ্রহণসহ বেশ কিছু বিষয়ে দু'জনের মতবিরোধকে কেন্দ্র করেই তাদের সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করেছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে বাদশাহ সালমানের মিসরে সফর থেকেই এর সূত্রপাত। সে সময় বাদশাহর উপদেষ্টারা তাকে সতর্ক করেছিলেন যে, তার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছেন ক্রাউন প্রিন্স সালমান। তারপর থেকেই রাজপরিবারে চাপা উত্তেজনা শুরু হয়।
বাদশাহর অনুগত ব্যক্তিরা এই হুমকিকে গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করে বেশ সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। এজন্য বাদশাহর মিসর সফরে তার নিরাপত্তার বিষয়টি বিশ্বস্ত ৩০ জনের ওপর ন্যাস্ত করা হয়েছিল যারা বাদশাহর সবচেয়ে অনুগত। সে সময় মিসরের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদেরও সরিয়ে দেয়া হয়েছিল।
মিসর সফর শেষে বাদশাহ যখন দেশে ফেরেন তখন যেসব বিশিষ্ট লোকজন তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত হয়েছিলেন সেখানে এমবিএস হিসেবে পরিচিত ক্রাউন প্রিন্সকে দেখা যায়নি।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আলজেরিয়া এবং সুদানে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বাদশাহ সালমানের কঠোর অবস্থান এবং একই সঙ্গে ইয়েমেন যুদ্ধে বন্দীদের চিকিৎসার বিষয়ে বাদশাহ সালমান এবং ক্রাউন প্রিন্সের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়।
এছাড়া গত বছরের অক্টোবরে সৌদির ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রিয়াদের দীর্ঘদিনের মিত্র ওয়াশিংটনের সঙ্গেও সম্পর্ক ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে অবস্থিত সৌদি দূতাবাসে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন খাশোগি।
সৌদির একটি হিট স্কোয়াড টিমের হাতে নিহত হন জামাল খাশোগি। প্রথমদিকে তার মৃত্যুর খবরটি অস্বীকার করলেও পরে সৌদির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কনস্যুলেটের ভেতরে সংঘর্ষে জড়িয়ে নিহত হয়েছেন খাশোগি। তবে ক্রাউন প্রিন্সের নির্দেশেই জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে পশ্চিমা বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা এবং রাজনীতিবিদরা।
ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট জামাল খাশোগির মৃত্যুর জন্য সৌদিকে শাস্তি পেতে হবে বলেও উল্লেখ করেছেন মার্কিন কংগ্রেসের শীর্ষ সদস্যরা। এজন্য কাজ করছেন তারা। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ক্রাউন প্রিন্সের সম্পর্ক আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়েছে। সে কারণে খাশোগি হত্যাকাণ্ডে ক্রাউন প্রিন্সের দিকে আঙুল তোলা হলেও তারা মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখায়নি।
টিটিএন/এমকেএইচ