অভিনন্দনের পাঁজরে-মেরুদণ্ডে মারের চোট
পাকিস্তানে দুই দিন আটক থাকার পর গত শুক্রবার দেশে ফেরা পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে নিয়ে মাতোয়ারা পুরো ভারত। তবে দেশ খুশির জোয়ারে ভাসলেও এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেননি অভিনন্দন। ডান চোখে এখনও আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট। মেরুদণ্ড ও পাঁজরে চোট রয়েছে। আর মানসিক আঘাত তো রয়েছেই। সোমবার ভারতের জনপ্রিয় বাংলা পত্রিকা আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে এসব দাবি করা হয়েছে।
উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান দেশটির বিমানবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, দ্রুত ককপিটে ফিরতে চান তিনি।
সরকারি একটি সূত্র জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত অভিনন্দনের শরীরে কোনো রকম ‘বাগ’ বা আড়িপাতার জন্য চিপ-এর সন্ধান মেলেনি। পাকিস্তান এই ধরনের ‘বাগ’ তাদের হাতে বন্দীদের শরীরে ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে বলে সন্দেহ করা হয়। তাই নিয়ম মেনে অভিনন্দনের শরীরে এমআরআই স্ক্যান ও অন্য পরীক্ষা করা হয়েছে।
সরকারি সূত্র বলছে, স্থানীয় পাকিস্তানিদের হাতে পড়ে মারধর খাওয়ার ফলে অভিনন্দনের পাঁজরে চোট লেগেছে। তার মেরুদণ্ডের নিচের অংশেও চোট রয়েছে। অভিনন্দন যে মিগ যুদ্ধবিমান নিয়ে পাকিস্তানের এফ-১৬ বিমানের পিছনে ধাওয়া করেছিলেন, তা পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্রের নিশানায় পড়ায় তাকে বিমানের ককপিট থেকে বেরিয়ে পড়তে ‘ইজেক্ট’ করতে হয়। সেই সময় মেরুদণ্ডে চোট লেগে থাকতে পারে বলে চিকিৎসকদের ধারণা।
আজ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সুভাষ ভামরে সেনা হাসপাতালে অভিনন্দনকে দেখতে যান। অভিনন্দন এ সময় তার সঙ্গে হাসি মুখেই কথা বলেন।
শুক্রবারই ওয়াঘা থেকে ভারতের মাটিতে পা রাখেন অভিনন্দন। অমৃতসর থেকে দিল্লিতে নেয়ার পর প্রথমে তাকে বিমানবাহিনীর সেন্ট্রাল মেডিকেল এস্টাব্লিশমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তাকে আর্মি রিসার্চ অ্যান্ড রেফেরাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
অভিনন্দন দ্রুত ককপিটে ফিরতে চাইলেও সেনা সূত্র জানিয়েছে, আগামী ১০ দিন অভিনন্দনের নানারকম পরীক্ষা ও চিকিৎসা চলবে। অভিনন্দনের ওপর পাকিস্তানি সেনা শারীরিক অত্যাচার না চালালেও, মানসিক চাপ তৈরি করেছিল। তাকে জেরাও করা হয়েছিল।
আজ কয়েক দফায় গোয়েন্দা, সেনা ও বিমানবাহিনীর কর্তারা অভিনন্দনের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই ‘ডিব্রিফিং’ প্রক্রিয়ায় তার সঙ্গে পাকিস্তানে কী ধরণের আচরণ করা হয়েছে, তিনি কী বলেছেন, তা জানার চেষ্টা হয়েছে।
একইসঙ্গে এ বিষয়ে তিনি পরিবার ও সহকর্মীদের সামনে কতখানি মুখ খুলবেন, তাকে ভবিষ্যতে কী ভাবে চলতে হবে, তা বোঝানোর কাজ শুরু হয়েছে।
এসআর/এমকেএইচ