প্রেমিককে হত্যা করে জ্বালিয়ে দিলেন প্রেমিকা
দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ের প্রস্তুতিও চলছিল। কিন্তু হঠাৎ নতুন সম্পর্কে জড়ান প্রেমিকা। বিয়ের আলোচনায় ভাটা পড়ে। কিন্তু বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন প্রেমিক। আর সে চাপ থেকে বাঁচতে প্রেমিকা ছঁক আঁকেন খুনের। প্রেমিকা সাহায্য নেন প্রেমিকের বন্ধুদের। প্রেমিককে হত্যার পর ঘটনাকে আত্মহত্যা প্রমাণে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলেন তারা।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে। প্রেমিকার হাতে খুনের শিকার তরুণের নাম রঞ্জিত। তার সেই প্রেমিকার নাম সায়নী। পুলিশ বলছে, শুধু প্রেমিকের বন্ধুই নয় প্রেমিককে খুন করতে সায়নী সাহায্য নেন তার পরিবারেরও। প্রাথমিক তদন্ত শেষে সোমবার পুলিশ ঘটনায় জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করেছে।
প্রেমিক আর প্রেমিকা দু’জনের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে। খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সায়নী মণ্ডল, তার বাবা মদনমোহন মণ্ডল, মা পরী মণ্ডল ও ভাই সোমশঙ্কর মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাছাড়া রঞ্জিতের দুই বন্ধু পবিত্র সিংহ ও অসিত দাসকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, প্রথমে আত্মহত্যা মনে হলেও ময়নাতদন্তের পর জানা যায় রঞ্জিতকে মারধরের পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। ঘটনাটি যাতে আত্মহত্যা মনে হয়, সে কারণে গায়ে পেট্রল ঢেলে জ্বালিয়ে দেয়া হয় তার মরদেহ।
পুলিশের হাতে এরকম তথ্য আসার পরেই খুনের মূল পরিকল্পনাকারী রঞ্জিতের প্রেমিকা এবং তার পরিবারের সদস্যদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। খুনের ঘটনায় তারা জড়িত কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরেই সোমবার তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
কলকাতায় একটি স্বর্ণালঙ্কারের দোকানে কাজ করত রঞ্জিত। কাজের জন্য বেশ কয়েকবার দিল্লি যান। কিন্তু ফিরে এসে প্রেমিকা সায়নীর সঙ্গে দেখা করতে যান। আর এরপরই তার আর খোঁজ পাওয়া যায় না। নিখোঁজ হওয়ার পর রঞ্জিত মণ্ডলের আগুনে পোড়া দেহ উদ্ধার করা হয় প্রেমিকার বাড়ির সামনে থেকে।
সায়নী অবশ্য দাবি করছে, তার সঙ্গে রঞ্জিতের প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। যদিও রঞ্জিতের পরিবারের দাবি, তাদের সন্তানকে খুন করা হয়েছে। রঞ্জিতের পরিবার বলছে, বিভিন্ন সময়ে সায়নী রঞ্জিতের কাছ থেকে মূল্যবান উপহার নিত। তাছাড়া রঞ্জিত তাকে টাকাও দিয়েছিল বলে জানান তারা।
বিয়ের আলোচনা চললেও হঠাৎ রঞ্জিতকে বিয়ে করতে অপরাগতা দেখান সায়নী। দ্বন্দ্বের শুরু সেখান থেকেই। রঞ্জিতের মরদেহ উদ্ধারের পর ভূপতিনগর থানায় অভিযোগ দাখিল হলে ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। পুলিশ রঞ্জিতের ব্যবহৃত মোবাইল তার এক বন্ধুর কাছ থেকে উদ্ধার করে। মোবাইলের সূত্র ধরে তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
এসএ/জেআইএম