ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

সেনারা মেরেছিল, তাই কাশ্মীরে আত্মঘাতী হামলা চালায় আদিল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৬:৩৭ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

কাশ্মীরে যে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর মাধ্যমে ভারতের আধাসামরিক বাহিনীর ৪৪ জন সদস্য নিহত হয়েছেন সেই হামলাকারী নাকি সেনা সদস্যদের কাছে হেনস্থা হয়েই তিন বছর আগে জঙ্গি সংগঠন জঈশ-ই-মোহাম্মদে যোগ দিয়েছিলেন। তার বাবা জানিয়েছেন, সম্ভবত সেনা সদস্যদের সেই হেনস্থার প্রতিশোধ নিতেই তিনি এ হামলা চালান।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে কাশ্মীরের সেই হামলাকারীকে নিয়ে এই তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে একদিন তাকে ঘিরে ধরে সেনাবাহিনী। তারপর প্রচণ্ড মারধর করে তার নাক মাটিতে দিয়ে সেনাবাহিনীর জিপের চারপাশে ঘোরানো হয়। তিন বছর আগের সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই জঙ্গি সংগঠন জঈশ-ই-মোহাম্মদে যোগ দেন আদিল আহমেদ দার।

আদিলের বাবা-মা রয়টার্সকে বলেন, আদিল ছোটবেলায় এমন ছিল না। স্কুলে যাওয়া আসা ছাড়া সে আর কোথাও যেত না। বেশ শান্ত স্বভাবেরই ছেলে তাদের ছেলে। কিন্তু ওই ঘটনাই তাকে ক্ষেপিয়ে দেয়। তার ভেতর সেই প্রতিশোধের প্রবল আকাঙ্ক্ষার ফল এই হামলা।

প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পুলওয়ামায় যেখানে আত্মঘাতী হামলার ঘটনাটি ঘটেছে সেখান থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের কাকাপোরায় আদিলের বাড়ি। তার স্কুল ছিল হাঁটা পথে বড়জোর ২ কিলোমিটার দূরে। আদিলের বাবা গুলাম হাসান দার একজন ফেরিওয়ালা।

আরও পড়ুন>> আপনারা যখন এই ভিডিও দেখবেন তখন আমি জান্নাতে থাকব

হামলার পর গত শুক্রবার আদিলের বাবা রয়টার্সকে বলেন, ‘একটা ঘটনার কথা মনে পড়ছে। আদিল স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল। সেনা সদস্যদের ওকে ধরে। অনেকক্ষণ আটকে রাখে। প্রচণ্ড মারধর করে। নাক মাটিতে দিয়ে চারপাশ ঘোরায়। এ ঘটনায় ও খুব অপমান বোধ করেছিল। অনেকবার সেই ঘটনার কথা সে আমাদের বলেছে। সেনাবাহিনী কেন তার সঙ্গে এমন ব্যবহার করল সেই প্রশ্নও ছিল তার।’

আদিলের বাবা গুলাম দার আরও বলেন, তিন বছর আগেকার ওই ঘটনার পর থেকে অনেকটা বদলে যায় আদিল। তার স্বভাবও রুক্ষ হয়ে ওঠে। আমাদের সন্দেহ হতো ছেলে বোধহয় জঙ্গি সংগঠনে যেতে চাইছে।’

সেনা সদস্যরা কেন আদিলকে সেবার হেনস্থা করেছিল তাও জানিয়েছেন গুলাম দার। তিনি বলেন, ‘বন্ধুদের সঙ্গে আদিল সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুড়েছিল। কাজটা সচেতনভাবে করেছিল বলে মনে হয় না। কিন্তু তার জন্য তাকে যেভাবে মারধর ও হেনস্থা করা হয় তা ওকে খুব রাগিয়ে দেয়। মাঝেমধ্যেই বলত, জঙ্গিদের দলে ভিড়ে যাবে।’

আদিলের মা ফাহমিদা বলেন, ‘সেনা সদস্যদের সঙ্গে সেই ঘটনায় আদিল খুব রেগে গিয়েছিল। তার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য সে মরিয়া হয়ে ওঠে। আমি সবসময় চাইতাম আদিল জঙ্গিদের সঙ্গ ছেড়ে বেরিয়ে আসুক। অনেকবার আমি তাকে বোঝানোরও চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি।’

সেনাবাহিনীর সঙ্গে সেই ঘটনার পর স্কুল ছেড়ে আদিল জঈশ-ই-মোহাম্মদে যোগ দেয়। সেখানে তার আরও দু’টি নাম ছিল। একটি হলো আদিল আহমেদ গাড়ি তাকরানেওয়ালা অপরটি ভাকাস কমান্ডে অব গান্ডিবাগ। পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা শুক্রবার লাশ ছাড়াই আদিলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন।

এসএ/এমকেএইচ

আরও পড়ুন