গর্ভবতী নারীর সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীদের এ কেমন ব্যবহার
ট্রেনে বসে আছেন কৃষ্ণকায় এক গর্ভবতী নারী। এমন সময় কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী সোজা চলে গেলেন তার কামরায়। টেনে-হেঁচড়ে কামরা থেকে তাকে বের করে নিয়ে আনার চেষ্টায় রত নিরাপত্তারক্ষীরা। কিন্তু ওই নারী কিছুতেই ট্রেন থেকে বের হতে ইচ্ছুক নন। এমতাবস্থায় অসুস্থ ওই নারীর প্রতি জোর প্রয়োগ করেন তারা।
পরে তাকে জোর করে প্ল্যাটফর্মের একটি বেঞ্চে বসানোর চেষ্টা করানো হয়। এ সময় তাদের পিছু পিছু হাঁটতে দেখা যাচ্ছে ওই নারীর ৫-৭ বছর বয়সী মেয়েকে। মাকে এ অবস্থায় দেখে তার চোখেমুখে আতঙ্ক। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পরায় তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।
মার্কিন বার্তা সংস্থা সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে। পরিবহন কর্মকর্তাদের অভিযোগ, ওই নারীর কাছে কোনো বৈধ টিকিট ছিল না। ফলে তাকে জরিমানা করা হয়। তাকে জরিমানা দিতে বলা হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। ফলে তাকে ট্রেনের কামরা থেকে বের করে দেয়া হয়।
লভোত্তে জ্যালো নামের একজন ব্লগার ও অ্যাক্টিভিস্ট মোবাইল ফোনে ধারণ করা পুরো দৃশ্যটি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, গর্ভবতী ওই নারীর বাচ্চা শিশুটি কাঁদছে এবং নিরাপত্তারক্ষীদের কাছ থেকে মাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। পরে একজন নিরাপত্তারক্ষী তাকে মায়ের কাছ থেকে আলাদা করেন।
ইনস্টাগ্রামে পোস্টটি আপলোড করে সংশ্লিষ্ট ঘটনায় সুইডেনে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত সুইডিশদের প্রতি বর্ণবৈষম্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন জ্যালো। এ ছাড়া বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। কমেন্টসে একজন এ ঘটনাকে ‘মানবাধিকার চরম লঙ্ঘন’ বলে মন্তব্য করেছেন।
স্টকহোমের পাবলিক পরিবহনের মুখপাত্র হেনরিক পালমার সিএনএনকে জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য নিরাপত্তারক্ষীদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া আছে। ওখানে আসলে কার ভুল ছিল, ভিডিও ফুটেজ দেখে সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে জানিয়ে মুখপাত্র বলেছেন, অভিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
এসআর/পিআর