রাখাইনে আরাকান আর্মি-সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ, রোহিঙ্গাসহ নিহত ৩
মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইন প্রদেশে সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় বিদ্রোহীগোষ্ঠী আরাকান অার্মির সংঘর্ষে অন্তত তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিহতদের দুই আরাকানি ও একজন রোহিঙ্গা তরুণ রয়েছেন। রাখাইনের বুথিডংয়ের পন নিও লেইক গ্রামের কাছে সংঘর্ষে এই প্রাণহানি ঘটে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে রাখাইনের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে আসা আরাকান আর্মি বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মিয়ানমার পুলিশের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। ওই হামলায় মিয়ানমার পুলিশের অন্তত ১৩ সদস্য নিহত হয়। এ ঘটনার পর থেকে প্রতিনিয়ত রাখাইনে আরাকান আর্মির বিদ্রোহীদের সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ চলছে।
স্থানীয় রোহিঙ্গা ও রাখাইন জনগোষ্ঠীর সদস্যরা বলছেন, বুথিডংয়ের পন নিও লেইক গ্রামে প্রায় ৮ হাজার রোহিঙ্গা ও কয়েক ডজন আরাকানি জনগোষ্ঠীর বাড়ি-ঘর রয়েছে। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের সময় এই গ্রামটি রক্ষা পেয়েছিল।
আরও পড়ুন : মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নতুন আতঙ্ক আরাকান আর্মি
রাখাইনের স্বাধীনতাকামী রোহিঙ্গা মুসলিমদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) হামলায় মিয়ানমার পুলিশের ব্যাপক প্রাণহানির পর ওই বছরের ২৫ আগস্ট ক্লিয়ারেন্স অপারেশন শুরু করে সেনাবাহিনী। রক্তাক্ত অভিযানের মুখে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
পন নিও লেইক গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেছেন, গ্রামের যে স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে সেখানে সোমবার বিকেলের দিকে তিনজনের মরদেহ দেখতে পেয়েছেন মুসলিমরা। তিনি বলেন, তারা বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। নিহতদের একজন ১৯ বছর বয়সী রোহিঙ্গা তরুণ এবং অপর দু'জন আরাকানি।
সংঘর্ষে নিহতদের শেষকৃত্য করতে চেয়েছিল স্থানীয় গ্রামবাসী; কিন্তু সেনাবাহিনী তিনটি মরদেহই নিয়ে যায়। পরে রোহিঙ্গা তরুণের মরদেহ ফেরত দেয়া হয়। নুরুল ইসলাম বলেন, নিহত দুই অারাকানির পরনে প্লেইন পোশাক ও কালো ব্যাক প্যাক ছিল। তাদের কাছে কোনো ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র অথবা গোলাবারুদ পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন : আমিরাতে এক কেজি স্বর্ণ জিতলেন বাংলাদেশি!
তবে নিরাপত্তার ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আরাকানি বলেন, সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন বেসামরিক মারা গেছেন। রোববার সকালের দিকে সংঘর্ষস্থানে মুসলিম গ্রামবাসীরা কিছু মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন।
তিনি বলেন, ওই দিন বিভিন্ন গ্রাম থেকে অন্তত ১৫ আরাকানিকে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। একই দিন আরাকান আর্মির সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। মঙ্গলবার সকালের দিকে বুথিডংভিত্তিক মিয়ানমার সীমান্ত পুলিশের প্রধান কার্যালয় থেকে ১৩ গ্রামবাসীকে ছেড়ে দেয়া হয়।
সূত্র : দ্য ইরাবতি।
এসআইএস/জেআইএম