ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের ‘সুপারওম্যান’ শেরবানু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৮:৫৬ এএম, ০৮ জানুয়ারি ২০১৯

পাকিস্তানের অর্ধেকের কম নারী সন্তান জন্ম দানের সময়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রীর সহায়তা পেয়ে থাকেন। বিশেষ করে প্রত্যন্ত পার্বত্য এলাকাগুলোতে গর্ভবতী নারীদের সন্তান জন্ম দিতে হয় কার্যত কারও সহায়তা ছাড়াই।

এমনই একটি দুর্গম অঞ্চলে ১০ বছর ধরে ধাত্রী হিসেবে সেবা দিয়ে আসছেন শেরবানু। তিনি তার নিজের সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে অনেক কষ্ট ভোগ করেছিলেন। এরপরই তিনি ঠিক করেন এই এলাকার মেয়েদের ধাত্রী সেবা দেয়াটাই হবে তার কাজ।

শেরবানু তার অভিজ্ঞতা থেকেই জানেন এটি কতটা কঠিন একটা কাজ। আর সে কারণেই তিনি ভাবলেন এ শুন্যতা তিনি পূরণ করবেন এবং এটিই তাকে পরিণত করলো ওই অঞ্চলের প্রথম প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রীতে।

তিনি বলেন, ‘আমি আসলে কখনো গুনে দেখিনি কিন্তু এটি নিশ্চিত কমপক্ষে একশ শিশুর জন্ম হয়েছে আমার হাত ধরেই।’

শেরবানু জানান, সন্তান জন্মদানের সহায়তার বিনিময়ে তিনি অর্থকড়ি নেন না। কেউ খুশি হয়ে চা খেতে দেয় আবার কেউবা হাতে একশ রুপি দেয়। এ এলাকার মানুষ গরীব এবং তাদের অনেকেরই কাজ নেই।

এভাবেই নিজের কাজ নিয়ে আনন্দের কথা বর্ণনা করছিলেন শেরবানু।

তিনি বলেন, ‘যখন আমার নিজের প্রথম সন্তান হয়েছিল তখন পুরো গ্রামে কোনো ধাত্রী ছিল না। দুই-তিন দিন আমি কষ্ট করেছি সন্তান জন্মের সময় কারও সহায়তা ছাড়াই। তখনই কষ্টটা আমি অনুভব করেছি। আর সে কারণেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে এটিই ভালো করে শিখবো।’

শেরবানু বলেন, এই পার্বত্য এলাকায় কোনো ধরনের সুযোগ সুবিধাই নেই। এমনকি জরুরি প্রয়োজনে কোনো গাড়িই পাওয়া যায় না। কিন্তু দিনে বা রাতে যখনই হোক, আমাকে কেউ ডাকলেই আমি চলে যাই।

স্থানীয় নারীদের কাছে শেরবানু এখন রীতিমত ‘সুপারওম্যান’। যিনি নারীদের সহায়তার জন্য নিজেই মিডওয়াইফ কিট কিনেছেন এবং তার আছে নিজস্ব প্রেশার মাপার যন্ত্র।

গ্রামের গর্ভবতী নারীদের খোঁজ থাকে তার কাছে এবং নিজেই ঘুরে ঘুরে খবর নেন, প্রেশার মাপেন। দেখেন সব ঠিক আছে কি-না। শেরবানুকে দেখে গ্রামের আরও কয়েকজন নারী ধাত্রীবিদ্যায় উৎসাহী হয়েছেন। তারপরেও এটি যথেষ্ট নয়। আরও বেশি সংখ্যক প্রশিক্ষিত নারী দরকার। কারণ এই এলাকাটি অনেক বড়।

শেরবানুর আশা, একদিন তার এলাকার সব মেয়েরাই প্রয়োজনীয় সব স্বাস্থ্যসেবা পাবে।

এমবিআর/জেআইএম

আরও পড়ুন