অগ্ন্যুৎপাতের জেরে বিমানের রুট পরিবর্তন করল ইন্দোনেশিয়া
আনাক ক্রাকাতাও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত অব্যাহত থাকায় সতর্কতা জারি করেছে ইন্দোনেশিয়া। একই সঙ্গে পরিবর্তন করা হয়েছে বিমানের রুট।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সুমাত্রা এবং জাভার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত সুন্দা স্ট্রেইট এলাকায় এখনও পর্যন্ত বিপজ্জনক সীমায় কালো ধোঁয়া উদগিরণ করেই চলেছে। ফলে বাড়তি সর্তকতার অংশ হিসেবে আগ্নেয়গিরি এলাকায় বিমানের রুট পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা এয়ারন্যাভ।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি বিমান সংস্থাটি বলেছে, আগ্নেয়গিরি এলাকায় বিপজ্জনক মাত্রায় আনাক ক্রাকাতাও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত অব্যাহত থাকায় ওই এলাকায় বিমানের রুট পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমানে অগ্ন্যুৎপাতটির মাত্রা দ্বিতীয় সর্বাচ্চ এবং তা প্রসারিত হয়ে বিশেষ সীমা ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আনাক ক্রাকাতা একটি ছোট আগ্নেয়গিরি দ্বীপ। ১৯২০ সালে ক্রাকাতোয়ার উদগিরণের ফলে এই দ্বীপের সৃষ্টি হয়। দ্বীপটি থেকে ১৮৮৩ সালে ইন্দোনেশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে। কেড়ে নেয় ৩৬ হাজার মানুষের প্রাণ।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, দ্বীপটির আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এখনও বিপজ্জনক সীমায় রয়েছে। ফলে আশপাশ এলাকায় এর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে।
এদিকে ভয়াবহ সুনামির পর হাজার হাজার মানুষ তাঁবু করে ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র বিশেষ করে মসজিদ, স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন। বলা হচ্ছে, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে চাল ও নুডুলস সরবরাহ করা হলেও সেখানে বিশুদ্ধ পানি, পোশাক ও কম্বলের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।
শনিবার উপকূলীয় শহর সুমাত্রা এবং জাভায় পর পর দুটি ঢেউ আঘাত হানে। প্রথম ঢেউ অতটা শক্তিশালী না হলেও দ্বিতীয় ঢেউটি ছিল ভয়াবহ। এর সঙ্গে পূর্ণিমার প্রভাব যুক্ত হওয়ায় বিপুল শক্তি নিয়ে সৈকতে আছড়ে পড়েছে সুনামির ঢেউ।
রোববার ফের নতুন করে অগ্ন্যুৎপাত হয়। নতুন করে আবারও সুনামির আশঙ্কায় আনাক ক্রাকাতাও আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের সমুদ্র উপকূলের কাছ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
ভয়াবহ সুনামিতে ইন্দোনেশিয়ায় এখন পর্যন্ত ৪৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, আহত হয়েছে আরও ১ হাজার ৪৫৯ জন। অপরদিকে এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে ১৫৯ জন। এখন পর্যন্ত ১২ হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আনাক ক্রাকাতাও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সাগরতলে ভূমিধসের কারণেই এই সুনামির উৎপত্তি হয়। এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র জানিয়েছেন, ক্রমাগত আনাক ক্রাকাতাও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে আবারও সুনামি আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।
সংস্থাটির মুখপাত্র সুতোপো পুর্বো নুগ্রোহো জানান, এ ঘটনার পর দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। তা আগামী ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এ সময়ের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশাবাদী এই মুখপাত্র।
সূত্র: আলজাজিরা
এসআর/এমকেএইচ