বছরের আলোচিত ৭ ছবি
আর মাত্র কয়েকদিন। এর পরই ইতি টানবে ২০১৮ সাল। ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে নতুন বছর। ২০১৮ সালে ঘটে গেছে অনেক ঘটনা। তবে চলতি বছরের কিছু আলোকচিত্র বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। চলুন দেখে নেয়া যাক কী সেই আলোকচিত্রগুলো এবং তাদের পেছনের ইতিহাস।
শুয়ে পড়া চিত্র
এই আলোকচিত্রটি ক্যামেরাবন্দি করা হয় জানুয়ারিতে। এতে দেখা যাচ্ছে, একজন নারী রাস্তায় উপুড় হয়ে কনুইয়ের ওপর ভর করে শুয়ে আছেন। পা দুটি কিঞ্চিত ওপরের দিকে তুলে দেয়া। চোখে আনমোনা চাহনি। তার পেছনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে একদল পুলিশ। ছবিটি হন্ডুরাসের। প্রেসিডেন্ট জুয়ান অরলানডো হারনার্ন্দেজের পুনর্নির্বাচনের দাবির প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলাকালে হন্ডুরান সিটির তেগুসিগালপার একটি সড়কে পুলিশের সামনে শুয়ে পড়েন তিনি।
এক্স-রে স্টাইল
দ্বিতীয় ছবিটি চীনের। চীনের দক্ষিণাঞ্চলের ব্যস্ততম চেকপয়েন্ট দঙ্গুয়ান রেলওয়ে স্টেশন থেকে তোলা। ছবিটির পেছনের ইতিহাস হলো ওই স্টেশনে এক নারীর শরীর তল্লাশির পুরো শরীর মেশিন দিয়ে স্ক্যান করা হয়। তবে স্ক্যানের পরে দে দৃশ্যটি ফুটে ওঠে তা অনেকটা ভৌতিক।
এতে দেখা যাচ্ছে, এক্স-রে রশ্মি তার শরীরের মাংস ভেদ করে অস্থিমজ্জা পর্যন্ত পৌঁছেছে। হামাগুড়ি দেয়ার স্টাইলে স্ক্যান এই নারীর শরীরের এক্স-রে চিত্র দেখলে হাজার হাজার বছর আগের আদিমযুগের কোনো মানবীকে মনে করিয়ে দেবে। একইসঙ্গে এটিকে আধুনিকও মনে হবে।
গভীর মনোযোগ
হস্টন রকেটস ও মিনেসোটা টিম্বারওল্ভমের মধ্যকার বাস্কেটবল খেলা চলাকালে ছবিটি এপ্রিলে তোলা। ছবিটি দেখা যাচ্ছে, হস্টন রকেটস টিমের গার্ড জেমস হারডেন খেলার একপর্যায়ে তার শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখতে না পেরে দর্শকসারিতে পড়ে যাচ্ছেন। এ সময় দর্শকদের তাকে ঠেকাতে তোড়জোড় দেখা গেলেও হারডেন কিন্তু চেয়ে আছেন বলের দিকে। তার খেয়ালই নেই যে তিনি কারোর ওপর পড়ে যাচ্ছেন।
লাভার স্রোত
৫ মে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে ৪০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর জেরে সুপ্ত আগ্নেয়গিরি কিলাওয়েয়া হঠাৎ বিস্ফোরিত হয়ে ওঠে। জ্বালামুখ দিয়ে উদগিরণ হতে থাকে টগবগে লাল লাভা, ছাই, ধোয়ার কুণ্ডলী আর গ্যাস। সেই টগবগে লাভা রাস্তা দিয়ে বন্যার পানির ন্যায় ধেয়ে আসে। এই লাভা স্মরণ করিয়ে দেয় ১৮ শতকের ইতালির ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির লাভার কথা।
জি৭ সম্মেলন
এই ছবিটি জুনে জি৭ সম্মেলন চলাকালে তোলা। এতে দেখা যাচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘিরে রয়েছেন বিশ্বনেতারা। ট্রাম্প বসা আর তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে জার্মান চ্যান্সেরল অ্যাঞ্জেলা মার্কেল, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাঁখো। সবার চোখেমুখে চিন্তার ছাপ। যেন তারা কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইচ্ছুক কিন্তু তারা কোনো মতৈক্যে পৌঁছাতে পারছেন না। এ ছবিটি নেদারল্যান্ডের বিখ্যাত চিত্রকর হিয়েরোনিমাস বচেসের দ্য কনজ্যুরার (১৫০২) কে মনে করিয়ে দেয়।
ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী
এই ছবিটি একজন ফিলিস্তিনি প্রতিবাদী যুবকের। এতে দেখা যাচ্ছে, বিষাক্ত টিয়ারগ্যাস সহ্য করে ডান হাত দিয়ে দেশের পতাকা ধরে রেখে আর বাম হাত দিয়ে আগ্রাসী ইসরায়েলের নিরাপত্তাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলতি দিয়ে পাথর ছুরে মারছে এক যুবক। ২২ অক্টোবর গাজা শহর থেকে ছবিটি ক্যামেরাবন্দি করা হয়।
মাথায় খিমচি কাটা
মাইক হামফ্রে। তিনি একজন রোবট এক্সপার্ট। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, মাইক এক ব্যক্তির মাথার খুলি নাড়াচাড়া করছেন। আর লোকটি চুপ করে বসে আসে। কোনো ব্যথা তিনি তো পাচ্ছেনই না, বরং খুবই শান্তশিষ্ট। অবাক করার বিষয় তাই না। আসলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। ওই ব্যক্তির নাম ফ্রেড। সে একটি রোবট। তবে তার মুখায়ব এতই নিখুঁত যে, কারো মনেই হবে না এটি একটি রোবট।
সূত্র: বিবিসি
এসআর/জেআইএম