স্বামীর মুক্তির দাবিতে মাথা ন্যাড়া
বিনা-বিচারে মানবাধিকার আইনজীবীদের আটকে রাখার প্রতিবাদে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের রাস্তায় চারজন নারী তাদের মাথা ন্যাড়া করছেন। দেশটির বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতেই তারা এই প্রতিবাদ করছেন বলে জানিয়েছেন।
বেইজিংয়ের হংসিকান পিপলস হাই কোর্টের সামনে তারা এই প্রতীকী প্রতিবাদ দেখিয়েছেন তারা। আদালতের বাইরে ওই নারীরা চিৎকার করে বলেন, আমরা ন্যাড়া হতে পারি, কিন্তু দেশে বিচারহীনতা চলতে পারে না। তবে পুলিশ ওই নারীদের আদালত প্রাঙ্গনে প্রবেশ করতে দেয়নি।
চীনা শব্দ উফার দু’টি অর্থ রয়েছে। এর একটি হলো সম্পূর্ণ মাথা ন্যাড়া করা এবং দ্বিতীয়টি, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়া। ওই চার নারী এই শব্দটিকেই প্রতীকী হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
আরও পড়ুন : ৪৯ হাজার টাকায় ১১০ সিসির মোটরবাইক
২০১৫ সালের ৯ জুলাই দেশটিতে মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় অভিযানের সময় এই চার নারীর স্বামীকেও আটক করা হয়।
আইনজীবী ওয়াং কোয়ানঝাং, যিনি রাজনৈতিক কর্মী ও উচ্ছেদ অভিযানে ভূমি হারানোদের আইনী সুরক্ষায় কাজ করেন। দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সমালোচক তিনি। ২০১৫ সালের ধরপাকড় অভিযানের সময় নিখোঁজ হন তিনি।
পরে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রশক্তি ধ্বংসের অভিযোগ আনা হয়। সেই সময়ের তথাকথিত ৭০৯ নামের ওই অভিযানে দেশটির ২ শতাধিক আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়; যারা মূলত নিপীড়িত মানুষের পক্ষে লড়াই করতেন। এই আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীদের অনেকের খোঁজ পাওয়া যায়নি; আবার অনেকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন : হাসপাতালে আগুনে প্রাণ গেল ৮ জনের
আইনজীবী ওয়াং কোয়ানঝাংয়ের স্ত্রী লি ওয়েনজু বলেন, সঠিক ব্যাখ্যা ছাড়াই আমার স্বামীকে আটক রাখা হয়েছে। স্বামীর মুক্তির জন্য এখন পর্যন্ত ৩১ বার দেশটির সুপ্রিম কোর্টে গেছেন। তার স্বামীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের নথি-পত্র জমা দেয়ার চেষ্টা করেছেন; কিন্তু আদালতের ভেতরে একবারের জন্যও প্রবেশ করতে পারেননি তিনি।
‘আমি জানতে চাই, কেন যথাযথ প্রক্রিয়া অনুস্মরণ করা হচ্ছে না। আমি জানতে চাই, কেন তারা পারিবারিক আইনজীবীকে ওয়াংয়ের সঙ্গে দেখা করতে দিচ্ছেন না।’
তবে এই আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীদের আটকে রাখার ব্যাপারে যোগাযোগ করেও চীনা কোনো কর্মকর্তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সূত্র : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, বিবিসি।
এসআইএস/জেআইএম