নদীতে চলছে যাত্রীবাহী বাস
জলেও চলে, আবার রাস্তাতেও চলে। কখনো যানজট কাটিয়ে এগিয়ে চলে রাস্তায় আবার কখনও ঢেউ ভেঙ্গে নদীর স্রোত পেরিয়ে চলে এই বাস। বাসে রয়েছেন যাত্রী। কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে এমনটাও নয়। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘অ্যাম্ফিবিয়াস বাস।’ রাস্তায় কিংবা নদীতে সমান স্বচ্ছন্দ এই বাসটি চলছে ইউরোপের দেশ জর্মাানিতে।
ডাঙা থেকে সহজেই জলে নেমে পড়ল বাসটা। তারপর দ্রুত এগিয়ে চলল। যানজট থেকে বাঁচতে বড় শহরের জন্য উপযুক্ত এই বাস। নদী বা নদীর কূলবর্তী শহরগুলোর জন্য এই বাস বেশ জরুরিও বটে।
অভিনব এই বাস চালু করা হয়েছে জার্মানির হামবুর্গ শহরে। এলবে নদীর কিনারেই এই শহরটি অবস্থিত। বর্তমানে ওই শহরের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠেছে এই রিভার বাস। বাসটির চিন্তা প্রথম মাথায় আসে ফ্রেড ফ্রাঙ্কেন নামে এক ব্যক্তির। চার বছর আগে তিনিই প্রথম এ ধরনের বাসে চলাচল করার পদ্ধতি চালু করেন।
মেরিটাইম ওয়ার্কার ফ্রেড বলেন, প্রথম সিঙ্গাপুরে এমন একটি বিষয় নজরে এসেছিল তার। ওই ভাবনা থেকেই হাঙ্গেরির একটি সংস্থার সহায়তায় তৈরি হয়েছে এই রিভারবাস।
প্রথম দুই মাসে ৬ হাজার ৫’শ জন যাত্রী উঠেছিল বাসটিতে। বাসটি বিপুল সাড়া ফেলে পর্যটক ও স্থানীয়দের মধ্যে। তিনি বলেন, এই হামবুর্গ শহরের মতো আরও সাতটি নদী তীরবর্তী শহরেও এই রিভারবাস চালু করার আবেদন এসেছে। তবে এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত অপর কর্মকর্তা ফিয়েতে জানান, এই বাসের পরিচর্যার খরচ অনেক।
যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য বাসের চালকের আসনের পাশে কিন্তু লাইফ জ্যাকেট, জয়স্টিক, রেডিও ইক্যুয়িপমেন্টসহ আরও অনেক কিছু। বাসটির ইঞ্জিনের রয়েছে ২৮০ হর্স পাওয়ারের ছয় সিলিন্ডার। তাছাড়া বাসটির প্রযুক্তি অনেকটাই জাহাজের প্রযুক্তির মতোই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
তব এ বাসের আসনও অন্য সাধারণ বাসের মতোই। যাত্রা শুরু হলে প্রথমেই শহরটি ঘুরে দেখতে পারেন যাত্রীরা। আর তার পর কিছুক্ষণের বিরতি দেওয়া হয়। যাত্রীদের বলা হয়, আপনারা ছবি তুলতে পারেন বাস থেকে নেমে।
বিরতির ওই সময় বাসটা নদীতে ভেসে বেড়ানোর জন্য উপযুক্ত কি না, তা পরিক্ষা করা হয়। তারপরই বাসটি এলবে নদীর মধ্যে ভেসে বেড়ায় একটা স্টিমার বোটের মতোই। সবমিলিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো থাকা যায় এই বাসে।
বাসটির গতিবেগও নেহাৎ কম নয়। প্রতি ঘণ্টা ৬৫ কিলোমিটার বেগে চলে এটি। যাত্রীদের জন্য ৩৬টি আসনের এই বাসের ভাড়া প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দুই হাজার চারশ টাকা আর ৫ থেকে ১৪ বছরের শিশুদের জন্য ভাড়া প্রায় এক হাজার সাতশ টাকা।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
এসএ/এমএস