আজও না খেয়ে মরে ভারতবাসী!
ভারতে আজও না খেতে পেয়ে মানুষ মারা যায়! ভারতজুড়ে অনাহারে মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় অহরহ। দেশটির রাজধানী দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যেও অনাহার আর অপুষ্টিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
গত জুলাই মাসে পূর্ব দিল্লির মান্ডাওয়ালি এলাকায় অনাহারে একসঙ্গে তিন শিশুকন্যার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। টানা আটদিন ধরে অভুক্ত ছিল দুই থেকে আট বছর বয়সী ওই শিশুরা। মৃত্যুর সময় মায়ের কাছে শিশুদের আর্তি ছিল, ‘মা খেতে দাও।’
এমন ঘটনা ঘটেছে মমতা ব্যানার্জির পশ্চিমবঙ্গেও। কয়েকদিন আগে রাজ্যের ঝাড়গ্রাম জেলার জঙ্গলমহলের লালগড়ে পূর্ণাপানিতে অনাহারে সাতজনের মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, এই এলাকায় অনাহার ও অপুষ্টির কারণে মৃত্যু হয়েছে মঙ্গল শবর (২৮), কিসান শবর (৩৪), লেবু শবর (৪৬), সুধীর শবর (৬৩), সাবিত্রী শবর (৫১), পল্টু শবর (৩৩) ও লাল্টু শবরের (৩৮)।
একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের কুশীনগরের মুসাহররায়। গত সেপ্টেম্বরেই সেখানে খেতে না পেয়ে মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের।
দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির সাগরপুর বস্তি এলাকায় বড় রাস্তার পাশে অস্থায়ী তাঁবুতে বসবাস করেন পান্নালাল। বাবা-মা, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে মোট ১২ জনের সংসার তার। পেশা ভিক্ষা।
পান্নালালের স্ত্রী কবিতা জানালেন, যেদিন কিছু টাকা-পয়সা জোটে, সেদিন সবাই মিলে আধপেটা খাবার খাই। যেদিন ভিক্ষা জোটে না, সেদিন ভরসা শুধুই জল।
সম্প্রতি এক জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে অনাহার ও অপুষ্টিজনিত মৃত্যু বন্ধে কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে কেন্দ্র ও দিল্লির সরকারকে নোটিশ পাঠিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট।
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাজেন্দ্র মেনন এবং বিচারপতি ভি কে রাওয়ের বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
মামলায় দাবি করা হয়েছে, অধিকাংশ বস্তি ও ঝুপড়িবাসীদের মধ্যে অনাহার ও অপুষ্টির কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। সরকারি নিয়মে রেশন কার্ডধারীদের ভর্তুকি দরে খাদ্যশষ্য দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে বস্তি, ঝুপড়ি ও ফুটপাথবাসীদের অনেকের কাছেই রেশন কার্ডটুকুও নেই।
মামলায় আরও বলা হয়, বস্তিবাসীদের একটা বড় অংশের রেশনকার্ড না থাকায় তারা ভর্তুকির খাদ্যদ্রব্য থেকে বঞ্চিত হন। এ কারণে এসব এলাকায় অপুষ্টি এবং অনাহারে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
সূত্র: ডয়েচেভেলে
বিএ/এমএস