দেওবন্দকে ‘সন্ত্রাসের পীঠস্থান’ বলে তীব্র সমালোচনার মুখে মন্ত্রী
ভারতের উত্তর প্রদেশের ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দকে সন্ত্রাসের পীঠস্থান বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির কেন্দ্রীয়মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা গিরিরাজ সিং। বুধবার তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘জানি না দেওবন্দ শিক্ষার মন্দির না সন্ত্রাসের মন্দির। হাফিজ সাঈদ ও বাগদাদি এখানকারই। এখানে মানবকল্যাণের পাঠ দেয়া হয়, নাকি মানব নিধনের শিক্ষা দেয়া হয়? কারণ বাগদাদি মানুষ নিধন করছে। হাফিজ সাঈদ ২৬/১১তে ভারতে সেটাই করেছে। এরা দু’জনই দেওবন্দের শিক্ষার্থী ছিলেন এমনটাই লোকে আমাকে জানিয়েছে। আমি এজন্য মনে করি এটা শিক্ষার মন্দির নয়, সন্ত্রাসের মন্দির।’
বৃহস্পতিবার এ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুস সালাম বলেন, ‘মন্ত্রী যে কথা বলেছেন, বাস্তবের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই। দারুল উলুম দেওবন্দ স্বাধীনতা সংগ্রামী তৈরি করার প্রতিষ্ঠান। মূলত সমস্যা হয়েছে বর্তমানে যারা বিজেপি-আরএসএসের কর্মকর্তা; তাদের ইতিহাস সম্পর্কে কোনো জ্ঞান নেই। স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের কোনো অবদান নেই।’
আরও পড়ুন : পতিতালয়ে ১৫ বছর পাশবিকতার শিকার ওরাংওটান!
তিনি বলেন, যেসমস্ত প্রতিষ্ঠান স্বাধীনতা সংগ্রামে বিরাট বড় ভূমিকা পালন করেছে তাদের চরিত্র হনন করে এরা নিজেদের জীবিকা ও নিজেদের রাজনীতি করতে চায়। মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের কাছে যদি কোনো তথ্য থাকে তাহলে তার উচিত এ নিয়ে পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখা। তিনি পার্লামেন্টে বিষয়টা তুলতে পারেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করার প্রয়োজন কী আছে?
মুফতি সালাম বলেন, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দারুল উলুম দেওবন্দের লড়াই বিশ্বখ্যাত। সারা পৃথিবীতে দারুল উলুম দেওবন্দ এ ব্যাপারে সুনাম ও খ্যাতি অর্জন করেছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ফতোয়া দারুল উলুম দেওবন্দ দিয়েছে। এসব তো খব সাম্প্রতিক ঘটনা। সেগুলকে বিকৃত করে মন্ত্রী বক্তব্য রেখেছেন ভারতের আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবদের চরিত্র হনন করার উদ্দেশ্যে। মানুষ দারুল উলুম দেওবন্দকে জানে, তার কর্মকাণ্ডকে জানে। দারুল উলুম দেওবন্দের দরজা, তার সদর গেট সবসময় খোলা থাকে সেখানে গোপনীয়তার কোনো জায়গা নেই। সেখানে সমস্ত ধর্মের মানুষদের যাতায়াতের উদার আহ্বান আছে।’
আরও পড়ুন : পৃথিবী পর্যবেক্ষণে নতুন উপগ্রহ উৎক্ষেপণ ভারতের
মজলিশ ইত্তেহাদ-এ-মিল্লাতের জেলা সভাপতি মুফতি আহমদ গৌড় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, ‘এটা একথারই প্রমাণ যে, দেশের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এসব লোকদের নিয়ত স্পষ্ট নয়। এরা দেশের মধ্যে আজও ব্রিটিশদের মতো বিভক্ত করে শাসন করো নীতি গ্রহণ করে রাজত্ব করছে।’
অল ইন্ডিয়া জমিয়ত রাজপুতের সভাপতি মাওলানা মুস্তাফা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মানসিক ভারসাম্য ঠিক নেই এজন্য তাকে ভালো চিকিৎসকের কাছে নিজের চিকিৎসা করানো উচিত। বিজেপি এসব লোককে উৎসাহ দিয়ে দেশকে বিভক্ত করে ধ্বংস ও বরবাদ করতে চাচ্ছে।’ পার্সট্যুডে।
এসআইএস/পিআর