নিয়মিত স্কুলের শৌচাগার পরিষ্কার করেন প্রধান শিক্ষক
তিনি প্রধান শিক্ষক। কিন্তু সকাল সকাল স্কুলে গিয়ে এই ব্যক্তিকে দেখলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী বলে ভ্রম হতে পারে। কারণ তিনি কাজটাই করেন সেরকম। স্কুলে গিয়ে সবার প্রথম তার কাজ পড়ুয়াদের শৌচাগার পরিষ্কার করা। তা-ও নিজ হাতে। এই কাজে অন্য কারও সাহায্যও নেন না।
বিনয়ী এই লোকটি ভারতের মাইশোরের গুন্ডলুপেটের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বি মহাদেশ্বরা স্বামী।
প্রধান শিক্ষক মানে কার্যত স্কুলের সর্বময় কর্তা। প্রশাসনিক প্রধানও বলা যায়। ছাত্র পড়ানো, স্কুলের নথিপত্রের কাজ এবং ওপরমহলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কাজই সাধারণত প্রধান শিক্ষকরা করে থাকেন। কিন্তু গুন্ডলুপেটের বি মহাদেশ্বরা এসবের বাইরেও পালন করেন তার নৈতিক কর্তব্য। স্কুলের খুদে পড়ুয়াদের স্বচ্ছ্বতার পাঠ দিতে নিজ হাতে পরিষ্কার করেন তাদের টয়লেট। তা-ও একদিন দু'দিন নয়, নিয়মিত এই কাজটি করতে দেখা যায় তাকে।
ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শুধু শৌচাগার পরিষ্কার করেই ক্ষান্ত হন না। এরপর শুরু করেন স্কুল চত্বরের বাগানের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ। কোনো কোনো দিন ক্লাসরুমও পরিষ্কার করতে দেখা যায় তাকে। স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষকের এই কাজে মুগ্ধ স্থানীয়রা। অনুপ্রাণিত হচ্ছে পড়ুয়ারাও।
মহাদেশ্বরা নিজে অবশ্য বিনয়ী। এর মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না তিনি। তিনি জানান, আগের স্কুলেও নিয়মিত শিশুদের শৌচাগার পরিষ্কার করতেন তিনি। বদলির পর প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছেন কিন্তু অভ্যসটা বদলায়নি।
তার মতে, ছাত্রছাত্রীদের স্বচ্ছ্তার পাঠ দেয়া সব শিক্ষকের নৈতিক কর্তব্য। সেই কাজে নিজেকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরতে চান মহাদেশ্বরা।
শুধু শৌচাগার পরিষ্কার করাই নয়। নিজের সীমিত বেতন থেকে টাকা জমিয়ে স্কুলে আস্ত একটা লাইব্রেরিও বানিয়ে ফেলেছেন মহাদেশ্বরা। স্থানীয়রা বলছেন, বর্তমান সমাজে মহাদেশ্বরাদের মতো শিক্ষকেরই প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি।
এসআর/আরআইপি