গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে বাহরাইনে বিরোধী নেতার যাবজ্জীবন
কাতারের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে বাহরাইনের বিরোধী নেতা শেখ আলি সালমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির শীর্ষ আদালত। হাইকোর্টের দেয়া খালাসের বিরুদ্ধে সরকারের করা আপিলে রোবাবর এ রায় দেন আপিল বিভাগ।
২০১৭ সালে কাতারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে বাহরাইন। শেখ আলি সালমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ -কাতারের সাথে যোগসাজশে তিনি ২০১১ সালে সরকার বিরোধী আন্দোলন উস্কে দিয়েছিলেন। সেই অভিযোগে ২০১৫ সাল থেকে কারাগারে রয়েছেন আলি সালমান এবং তার দল ওয়েফাক নিষিদ্ধ হয়েছে। অথচ ২০১১ সালে আগে বাহরাইনের সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল তাদের।
সাজা ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, বাহরাইনে ‘বিরোধীদের বিরুদ্ধে অব্যাহত নির্যাতনের’ অংশ হিসাবে ‘বিচারের নামে প্রহসন’ হয়েছে।
অ্যামনেস্টির মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা বিভাগের পরিচালক হেবা মোরায়েফ বলেন, ‘এই রায় প্রমাণ করে যে বাহরাইনের সরকার যেকোনো বিরোধী মত দমনে যেকোনো বেআইনি পথ নিচ্ছে। শেখ আলি সালমান একজন বিবেকের বন্দি, শান্তিপূর্ণভাবে তার মত প্রকাশের অধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে তাকে বন্দিত্ব বরণ করতে হয়েছে।’
আলি সালমান ছাড়াও তার আরও দুই সহযোগী রাজনীতিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। বার্তা সংস্থা এফপি বাহরাইনের সরকারি কৌঁসুলিকে উদ্ধৃত করে বলছে, ‘এই তিনজন দেশে সাংবিধানিক শৃঙ্খলা নষ্ট করতে কাতারি কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ রাখছিলেন।’
বাহরাইনের জনসংখ্যার সিংহভাগ শিয়া মুসলিম হলেও ক্ষমতাসীন রাজপরিবার সুন্নি মতাবলম্বি। ফলে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এবং ক্ষমতাধর পদগুলো সুন্নিদের বসানো হয়। ২০১১ সালে মধ্যপ্রাচ্যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়লে বাহরাইনের শিয়া সম্প্রদায়ও ন্যায্য অধিকারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন।
সৌদি আরবের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সেই বিক্ষোভ দমন করে আল খলিফা পরিবার। তবে কমপক্ষে ৩০ জন বিক্ষোভকারী এবং পাঁচ পুলিশ সদস্য প্রাণ হারান। তারপর থেকেই বাহরাইনে অসন্তোষ অব্যাহত রয়েছে। বিরোধী বহু দল নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং সেই সাথে সরকারকে সমালোচনা করার অভিযোগে হাজার হাজার মানুষকে কারাগারে ঢোকানো হয়েছে।
আরএস/জেআইএম