যুবরাজের অন্তরে এক, মুখে আরেক কথা?

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে একজন ‘বিপজ্জনক ইসলামিস্ট’ আখ্যায়িত করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনার ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের সঙ্গে টেলিফোন আলাপের সময় যুবরাজ সালমান খাশোগিকে ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’র সদস্য হিসেবে উল্লেখ করেন। বোল্টনসহ ট্রাম্প প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরেই মুসলিম ব্রাদারহুডবিরোধী।

সৌদি কর্তৃপক্ষ জনসমক্ষে খাশোগির মৃত্যুর কথা স্বীকার করার আগে এই টেলিফোন আলাপ হয় বলে জানা গেছে। সেই সময় যুবরাজ সালমান কুশনার ও বোল্টনকে দুই দেশের সম্পর্ক রক্ষায় কাজ করারও আহ্বান জানান।

আলোচিত এই টেলিফোন আলাপ সম্পর্কে জানেন এমন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তারা কথা বলেন।

তবে আলাপের সময় জন বোল্টন খাশোগি সম্পর্কে যুবরাজের বক্তব্য বিশ্বাস করছেন, এমন কোনো লক্ষণ দেখাননি বলে ওয়াশিংটন পোস্টকে জানান এক কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে ২ অক্টোবর খাশোগিকে হত্যা করা হয়। জামাল খাশোগি ওয়াশিংটন পোস্টে নিয়মিত কলাম লিখতেন। এদিকে, যুবরাজ সালমান টেলিফোন আলাপে খাশোগিকে ‘বিপজ্জনক ইসলামিস্ট’ বললেও গত সপ্তাহে এক আলোচনা সভায় তার হত্যাকে ‘সব সৌদির জন্য বেদনাদায়ক' বলে মন্তব্য করেছিলেন। ‘এই ঘটনা (হত্যা) গ্রহণযোগ্য নয়’- বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

সৌদি সরকারও এক বিবৃতিতে খাশোগির মৃত্যুকে ‘মারাত্মক ভুল’ ও ‘ভয়াবহ ট্র্যাজেডি’ বলে আখ্যায়িত করেছিল। হোয়াইট হাউস আলোচিত ওই টেলিফোন আলাপ সম্পর্কে তথ্য দিতে রাজি হয়নি। কিংবা কুশনার ও যুবরাজের মধ্যে কতবার টেলিফোনে কথা হয়েছে সেটিও জানায়নি। তবে এই বিষয়ে জ্ঞাত এক কর্মকর্তা ওয়াশিংটন পোস্টকে জানিয়েছেন, বোল্টন ও কুশনারের সঙ্গে যুবরাজের শেষ কথা হয়েছে ৯ অক্টোবর।

খাশোগির পরিবার যুবরাজ সালমানের মন্তব্য সঠিক নয় বলে দাবি করেছে। ওয়াশিংটন পোস্টের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে খাশোগির পরিবার জানায়, ‘জামাল খাশোগি মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্য ছিলেন না। গত কয়েক বছরে তার বিরুদ্ধে ওঠা এমন দাবি তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। জামাল খাশোগি কোনোভাবেই বিপজ্জনক ব্যক্তি ছিলেন না। এমন দাবি করা হাস্যকর।’ ডিডব্লিউ।

এসআইএস/জেআইএম