মদপান করে খাশোগি হত্যার উদযাপন করে ‘কিলিং স্কোয়াড’
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর হত্যা করা হয় জামাল খাশোগিকে। আর এই হত্যার জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৫ সদস্যের একটি কিলিং স্কোয়াড পাঠানো হয়। তুরস্কের দৈনিক দ্য হুররিয়াত ডেইলি নিউজের এক প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, ওই কিলিং স্কোয়াডের সদস্যদের বহনকারী একজন তুর্কি গাড়িচালক বলছেন, খাশোগিকে হত্যা করার পর বেশ খোশ মেজাজেই দেশে ফিরে যান তারা। এ সময় মদপান করে সফলভাবে খাশোগি হত্যার উদযাপন করেন ওই কিলিং স্কোয়াড।
শুক্রবার দেশটির বেসরকারি সংবাদমাধ্যম আহাবেরকে ওই গাড়িচালক বলেন, কিলিং স্কোয়াডের সদস্যদের যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত তিনটি গাড়ির মধ্যে একটি তিনি চালিয়েছেন। গত ২ অক্টোবর খাশোগিকে হত্যার আগেরদিন তাকে ভাড়া করা হয়। সে প্রথমদিন ওই কিলিং স্কোয়াডের সদস্যদের বিমানবন্দর থেকে হোটেলে নিয়ে যান। পরদিন তাদেরকে হোটেল থেকে কনস্যুলেটে নিয়ে যান।
ওই গাড়িচালক বলেন, ‘২ অক্টোবর দুপুর সাড়ে তিনটার সময় ৯ জন ব্যক্তি কামাল আতাতুর্ক বিমানবন্দরে এসে পৌছান। তারা আমাদের তিনটি গাড়ি ভাড়া করেন। আমি যে গাড়িটি চালাই সেখানে মাহের আব্দুল আজিজ মুতরেবসহ তিনজন ছিলেন। তারা আমাকে বলেছিলেন, আমি তাদের হোটেলে নামিয়ে দিয়ে পরদিন সকালে গিয়ে তাদেরকে নিয়ে কনস্যুলেটে যেন পৌছে দেই।’
১৬ অক্টোবর নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাসোগি হত্যার ঘটনায় তুর্কি কর্তৃপক্ষ ১৫ ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছেন। তারা সৌদি নিরাপত্তা, সামরিক বাহিনী ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তা ছিলেন বলে জানা গেছে।
গত কয়েকেদিনের আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, মাহির আব্দুল আজিজ মুতরিব নামের ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যায় প্রেরিত কিলিং স্কোয়াডের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এছাড়া খাশোগির মরদেহ সরিয়ে নেয়ার সঙ্গেও সে জড়িত বলে জানানো হয়। ধারণা করা হচ্ছে একটি বড় ব্যাগে করে তার মরদেহ কনসল্যুট থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়।
সৌদি যুবরাজ সালমানের সঙ্গে প্রায়ই ওই মুতরিবকে বিভিন্ন সফরে যেতে দেখা যায়। ২ অক্টোবর জামাল খাশোগির নিখোঁজ হওয়ার দিনে তিনি ইস্তান্বুল থেকে একটি ব্যক্তিগত বিমানে করে দেশে ফিরে যান।
তুর্কি ওই গাড়ি চালক বলেন, পরদিন সকালে তিনি ইস্তাম্বুলের হোটেলে গিয়ে মুতরেবসহ অন্যান্যদের কনস্যুলেটে দিয়ে আসেন। কনস্যুলেটের সানে তাদের গাড়ি যাওয়া সঙ্গে সঙ্গেই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ব্যারিকেড সরিয়ে দেন।
উল্লেখ্য, ওই গাড়িতে করে সৌদি কিলিং স্কোয়াড কনস্যুলেটে ঢোকার ঘণ্টাখানেক পর তিনটি গাড়ি বেরিয়ে যায়। ওই চালক বলছেন, ওখান থেকে বেড়োনোর পর তারা আমাকে এমন একটা জায়গার খোঁজ দিতে বলেন যেখানে বসে খাওয়া (মদ) যাবে। আমি তাদের ডোনার নামের একটি হোটেলে নিয়ে যাই। এসময় খুবই উল্লসিত অবস্থায় গাড়ির ভেতরেই তারা মদপান করছিল।
এসএ/জেআইএম