‘উইঘুর মুসলমানদের প্রতি রাষ্ট্রীয় নির্যাতন ক্ষমার অযোগ্য’
মালয়েশিয়ার রাজনৈতিক আইকন আনোয়ার ইব্রাহিম। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যেই দেশটির প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন তিনি। তারপরেও দেশটির ব্যবসায়িক মিত্ররা একটি বিষয়ে নিশ্চিত হতে চান যে, তিনি (আনোয়ার ইব্রাহিম) বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদের নেয়া প্রকল্পগুলো সামনে এগিয়ে নিতে চান কিনা?
সামনের সপ্তাহে আসন্ন চীন সফর নিয়ে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, তিনি চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মালয়েশিয়ার আইনের শাসন এবং ভবিষ্যৎ চীন-মালয়েশিয়ার সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা করবেন।
তিনি নিক্কিই এশিয়ান রিভিউকে দেয়া ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘তারা আমার থেকে জানতে চান যে, মালয়েশিয়ার ভবিষ্যৎ ঠিক কি রকমের হতে পারে।’
তিনি বেইজিংকে উইঘুর মুসলিম সমাজের অধিকারের কথা বিবেচনা করার জন্য আহ্বান জানান। বিশেষত উইঘুর মুসলিমদের ধর্মীয় এবং আন্দোলন করার স্বাধীনতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, যেকোনো ধরনের সংঘাত, হতে পারে সেটা রাষ্ট্র কর্তৃক বা সমাজ কর্তৃক, তা ক্ষমার অযোগ্য।
বেইজিং চীন-মালয়েশিয়ার ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে এক ধরনের উদ্বিগ্নতার মধ্যে রয়েছে, বিশেষত মাহাথিরের চীনমুখী নীতি এবং সাম্প্রতিক মালয়েশিয়ায় চীনা পৃষ্ঠপোষকতায় হতে যাওয়া কিছু বড় প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে চীন চিন্তিত।
তাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়া বিভাগের পরিচালক জেমস সিন বলেন, ‘বেইজিং আসলে নিশ্চিত হতে চায় যে, আনোয়ার কি ড. মাহাথিরের পরিকল্পনা ভিন্ন অন্য কোনো পরিকল্পনা নিতে চান কিনা।’
মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চীন বিষয়ক বিভাগের অধ্যাপক নেগেউ চোউ বিং বলেন, ‘দৃশ্যমান পরিবর্তনের চাইতেও চীন এবং মালয়েশিয়ার পরিকল্পনা একসঙ্গে চলমান থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘এখানে এক ধরনের মত রয়েছে যে, আনোয়ার অতিমাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকে রয়েছেন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তিনি পশ্চিমের মঙ্গে সম্পর্ক গড়তে গিয়ে চীনের সঙ্গে ভিন্নতর আচরণ করবেন।’
জেমস সিন বলেন, ‘মালয়েশিয়া সবসময় উইঘুর মুসলিমদের প্রতি সহায়তার নীতি নিয়ে চলে এবং তারা চায় বেইজিং চীনের মুসলিমদের অধিকার সম্পর্কে আরো আগ্রহী হোক।’
প্রসঙ্গত, চীন মালয়েশিয়ার ব্যবসায়িক দিকসমূহের বেশীরভাগই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির কোনোভাবেই চান না যে, মালয়েশিয়া রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের একটি খদ্দেরে পরিণত হোক।
এই বিষয়টি সম্প্রতি মালয়েশিয়ার একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নোরাজমান আইয়ুবের একটি বিবৃতি থেকে আরও পরিষ্কার হয়ে যায়। তিনি বলেছিলেন, ‘মালয়েশিয়া ততক্ষণ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মত বড় দুটো শক্তির সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে চাইবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না এদের এক পক্ষ মালয়েশিয়ার সরকারে হস্তক্ষেপ করতে চাইবে।’
এমবিআর/জেআইএম