‘বাংলা’য় আপত্তি মোদি সরকারের
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নাম ‘বাংলা’ বলে পরিচিত হবে -এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব গত ২৬ জুলাই রাজ্যের বিধানসভায় সর্বসম্মতভাবে পাস হয়েছে। তবে ‘বাংলা’ নাম নিয়ে দেখা দিয়েছে নতুন জটিলতা। বলা হচ্ছে, রাজ্যের বিধানসভায় পাস হলেও আদো ‘বাংলা’ নাম হবে কিনা তা নিয়ে বির্তক রয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে ‘বাংলা’ নিয়ে মোদি-মমতার সংঘাত রাজনৈতিক লড়াইয়ে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
২০১৬ সালের ২৯ আগস্ট রাজ্য বিধানসভায় পশ্চিমবঙ্গ নামের পরিবর্তন এনে তিনটি ভাষায় তিনটি নামের প্রস্তাব পাস হয়। ওই তিন ভাষায় মধ্যে বাংলাতে রাজ্যের নামের ‘বাংলা’ প্রস্তাব করা হয়, যা হিন্দিতে ‘বাঙাল’ আর ইংরেজিতে ‘বেঙ্গল’।
নাম সংশোধনে প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় সব কাজ শেষ হয়েছে। তবে পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত রূপায়ণে আরও কতদিন সময় লাগবে -তা নিয়ে বেশ ধন্দে রয়েছে রাজ্য সরকার। নাম বদলের প্রক্রিয়ায় গতি আনতে মোদির কেন্দ্রীয় সরকারকে লিখিতভাবে অনুরোধও জানিয়েছে রাজ্য।
বিধানসভায় প্রস্তাবটি পাস করে কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে রাজ্য। কিন্তু কেন্দ্রের কাছ থেকে এখনও কোনো জবাব আসেনি। প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার এখনও আমাদের কিছু জানায়নি। নামটি তারা গ্রহণ করছে কি না, তাও স্পষ্ট করেনি। ফলে রাজ্যের নাম পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় আরও কত দিন লাগবে, তা বোঝা যাচ্ছে না।’
প্রশাসনের আরও এক শীর্ষ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে কলকাতা২৪-এ বলা হয়েছে, ‘বাংলা’ নাম নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। আদৌ পশ্চিমবঙ্গের নাম ‘বাংলা’ করা উচিত হবে কি না, সেই প্রশ্নও তুলছে কেন্দ্রীয় সরকার।
নয়াদিল্লির সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও বাংলার মধ্যে মিল রয়েছে। বাংলাদেশ কলকাতার পাশের দেশ। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিড়ম্বনা তৈরি হতে পারে। এছাড়া বিতর্কের সূত্রপাত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এতে ভারতের বিদেশ নীতির উপর প্রভাব পড়তে পারে। এমনকী বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সৌর্হাদ্যপূর্ণ সম্পর্কেও প্রভাব পড়তে পারে।
এদিকে কেন্দ্রীয় রাজ্যসভা ‘বাংলা’ নামটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। আপাতত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেও তা মন্ত্রিসভায় পাস করাতে হবে। এরপর তৈরি হবে নাম সংশোধনী বিল। সেই বিল পেশ করা হবে মোদি সরকারের সংসদে এবং সংসদের অনুমোদন মিললে তবেই পশ্চিমবঙ্গের নাম হবে ‘বাংলা’।
আরএস/জেআইএম