ইন্টারপোল প্রধানকে নিয়ে কী বার্তা দিল চীন?
আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সদ্য পদত্যাগকারী প্রধান মেং হংওয়ের হঠাৎ নিখোঁজ হওয়া এবং পরে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিয়ে সারা বিশ্বে তোলপাড় হয়েছে।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে চীন আসলে জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক কিংবা আইএমএফ-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে একটি পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে যে, কোনো চীনা নাগরিক যেখানেই কর্মরত থাকুন না কেন তিনি যেকোনো সময়েই আটক হতে পারেন এবং অগ্রিম কোনো তথ্য ছাড়াই সেটি হতে পারে। এমটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এ বিষয়ে এশিয়া সোসাইটির সিনিয়র ফেলো ইসাক স্টোন ফিস বলছেন, ‘এর ম্যধমে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি দেশটির জনগণ ও বিশ্বকে দেখাতে চাইছে যে, তাদের নিজেদের নিয়মকানুনই এখানে নিয়ন্ত্রক এবং আর কারও কাছে তারা এসবের ব্যাখ্যা দিতে রাজী নন।’
সাম্প্রতিক সময়ে দুজন চীনা নাগরিকের হঠাৎ নিখোঁজ হওয়া নিয়ে সারা বিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়। এর একজন হলেন এক্স-ম্যান ও আয়রন ম্যান মুভির অভিনেত্রী ফান বিংবিং। তাকে কয়েক মাস ধরে জনসমক্ষে দেখা যাচ্ছিল না, এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তার কোনো কার্যক্রম ছিল না। এরপর হঠাৎ করেই চলতি মাসের শুরুতে তিনি হাজির হয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন কর ফাঁকি দেয়ার বিষয় নিয়ে।
আবার তার ফিরে আসার দু দিনের মধ্যেই নিখোঁজ হয়ে গেলেন স্বয়ং ইন্টারপোলের প্রধান মেং হংওয়েই। তার স্ত্রীর দাবি হারিয়ে যাওয়ার আগে তার স্বামী তাকে একটি ছুরির ইমোজি টেক্সট করেছিলেন যার মানে দাঁড়ায় যে, তিনি বিপদে আছেন। এরপর ৮ অক্টোবর চীনা কর্তৃপক্ষ জানায় তাকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এ দুটি ঘটনাই বিশ্বজুড়ে তোলপাড় তৈরি করে এবং আবারও বেরিয়ে আসে জোরপূর্বক গুম হওয়া চীনে নতুন কিছু নয়।
অনেকেই বলছেন, এরপর দেশটিতে অভিযান আরও কঠোর হয় এবং এটি একটি কাঠামোতে রূপ নেয়। করে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে শাস্তি পায় প্রায় দশ লাখ সরকারি কর্মকর্তা।
যদিও সমালোচকদের মতে, দুর্নীতির মতো বিষয়টি ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দাই বেশি নেয়া হচ্ছে।
দেশটির এক সময়ের প্রভাবশালী একজন নেতাকে জু ইয়াংকেংও এতে টার্গেট করা হয়েছিল। ২০১৫ সালে তাকে জেল দেয়া হয় ঘুষের অভিযোগ তুলে।
আর এবারে আলোচনায় এসেছে অভিনেত্রী ফান বিংবিং ও ইন্টারপোল প্রধান মেং হংওয়েইর নিখোঁজের ঘটনা। তারা দুজনই কয়েকদিনের জন্য হাওয়া হয়ে গেলেন যা সর্বত্র আলোচনার ঝড় তোলে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এসব ঘটনার মাধ্যমে আসলে দেশের অভ্যন্তরেই কড়া বার্তা দেয়া হয় যে, কেউই ছাড় পাবে না।
সূত্র : বিবিসি
এমবিআর/আরআইপি