ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

মন্দিরে নারীদের প্রবেশ ঠেকাতে উগ্র হিন্দুদের হামলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৬:৪৮ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০১৮

ভারতের কেরালার বিখ্যাত শবরীমালা মন্দিরের অনুষ্ঠান কাভার করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক। দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি, দ্য নিউজ, রিপাবলিক টেলিভিশন এবং সিএনএন-নিউজ ১৮'র প্রতিনিধিদের ওপর এ হামলা হয়।

এনডিটিভি বলছে, হামলাকারীরা মুখোশ পড়ে এবং হাতে অস্ত্র নিয়ে সাংবাদিকদের ওপর এ হামলা চালায়। শবরীমালা মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীদের প্রবেশের ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল সম্প্রতি তা তুলে দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার থেকে মন্দিরের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা থাকলেও নারীদের প্রবেশ করতে না দিয়ে উল্টো তাদের ওপর হামলা করেছে দেশটির কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদীরা।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তাদের প্রতিনিধিদের ওপর হামলা হয়েছে। মন্দির থেকে লাইভ সম্প্রচার করার সময় এ হামলা হয়। হামলার পর সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদক স্নেহা ম্যারি কোশি ও চিত্র সাংবাদিক এস পি বাবুকে হেনস্থা করে তাদেরকে ঘটনাস্থল থেকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়।

এছাড়া রিপাবলিক টিভি বলছে, তাদের প্রতিনিধিদের ওপর কমপক্ষে ১০০ জনের একটি দল হামলা করেছে। তাদের গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতের ব্যুরো চিফ পুজা প্রসন্নের ওপর হামলা করেছে বিক্ষোভকারীরা। এদিকে দ্য নিউজের সাংবাদিক সারিথা এস বালান নামের এক নারীকে মন্দিরে ঢোকার পথে বাঁধা দেয়া হয়।

অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসা এক নারীকে মন্দিরের মূল ফটক থেকে সাড়ে চার কিলোমিটার দূরেই আটকে দেন বিক্ষোভকারীরা। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। এছাড়াও সংবাদমাধ্যম সিএনএন-নিউজ ১৮' র প্রতিনিধির ওপরও হামলা করা হয়।

দেশটির সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ১৭ অক্টোবর অর্থাৎ বুধবার থেকে মন্দিরের কেরালার এই মন্দিরের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত হওয়ার কথা। কিন্তু সেই রায়ের বাস্তবায়ন ঠেকানোর জন্য কেরালা জুড়ে বিজেপি-সহ হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন দলের নেতৃত্বে এখন প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার থেকেই ভক্তরা পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বুধবার সকাল থেকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠে। মন্দিরমুখী সব রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে, গাড়িতে কোনও মেয়ে থাকলে তাদের নামিয়ে দিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। মন্দিরের দিকে যেতে বাধা দেয়া হয় নারী সাংবাদিকদেরও।

কেরালা বিজেপির সভাপতি পি এস শ্রীধরন পিল্লাই বলেন, ‘রাজ্যে এত বড় আন্দোলন আগে কখনও হয়নি। বিজেপি এখানে মানুষের দাবিকে সমর্থন করছে, কারণ তারা নিজেদের ধর্মবিশ্বাস রক্ষার জন্য লড়ছেন।’ ভক্তদের দাবি মেনে নারীদের প্রবেশ ঠেকানো না হলে বিজেপি আরও বড় আন্দোলনের পথে যাবে বলেও জানান তিনি।

রাজ্য পুলিশ বলছে, শবরীমালা মন্দির থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে শবরীমালা আচার সংরক্ষণ সমিতি বলে একটি সংগঠন ক্যাম্পের মাধ্যমে বিক্ষোভ করলে তাদের সরিয়ে দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে বুধবার (১৭ অক্টোবর) থেকে তিন মাসব্যাপী ‘মকরাভিলাক্কু’ উৎসব শুরু হবে শবরীমালায়। এ দিন নারীদের মন্দিরে ঢোকার অনুমতি দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের রায়ে বলা হয়, সব বয়সের নারীর অর্থাৎ ঋতুবতী নারীদের মন্দিরে প্রবেশে বাধা নেই।

এসএ/এসআইএস/জেআইএম

আরও পড়ুন