চার কাতারি নাগরিকের নিখোঁজের নেপথ্যেও সৌদি?
২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি। তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের কাছে থাকা তথ্য-প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে এ ঘটনার জন্য সৌদিকে দায়ী করে বলেছে, সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর খাশোগিকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়।
এরই মধ্যে সৌদিতে নিখোঁজ চার নাগরিকের মুক্তির দাবি জানিয়েছে পারস্য উপসাগরের দেশ কাতার। কাতারের মানবাধিকারকর্মীদের অভিযোগ, এসব নাগরিকদের গুম করেছে সৌদি সরকার।
গত বছরের মে মাস থেকে এসব নাগরিক সৌদি আরব থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। মঙ্গলবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরা টেলিভিশন চ্যানেলের ওয়েবসাইটে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে রোববার এক বিবৃতি দিয়েছে দোহাভিত্তিক জাতীয় মানবাধিকার কমিটি (এনএইচ)। এতে বলা হয়, এসব নাগরিক নিখোঁজ হওয়ার পেছনে সৌদি সরকারের হাত রয়েছে।
নিখোঁজ এসব ব্যক্তিদের সন্ধানে তদন্ত করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান আলী বিন সামিখ আল মারি। তিনি বলেছেন, ‘কাতারি নাগরিকদের সঙ্গে সৌদি কর্তৃপক্ষ যা করছে তা অত্যন্ত লজ্জার ও অমানবিক। পরবর্তী প্রজন্মের ওপর এর গভীর মানসিক প্রভাব পড়বে।’
নিখোঁজ এসব ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন তালাল নওয়াফ আল রশিদ (২৯) ও মহসেন আল করবি (৬৩)। তারা গত বছর পর্যায়ক্রমে এপ্রিল ও মে মাসে সৌদিতে যান এবং এরপর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন।
কাতার ও সৌদির দ্বৈত নাগরিকত্বের অধিকারী আল রশিদ প্রথমে কুয়েতে গ্রেফতার হন। পরে তাকে সৌদিতে পাঠানো হয়। তবে কাতারের মানবাধিকার সংগঠন বলছে, তারা আল রশিদের গ্রেফতার ও সৌদিতে পাঠানোর কারণ জানেন না।
জটিল রোগে আক্রান্ত আল করবি ইয়েমেনে আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়ে ইয়েমেন-ওমান সীমান্ত থেকে সৌদি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন।
নিখোঁজ অন্য দুইজন সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি। এদের একজন চলতি বছর ও আরেকজন গত বছর সৌদিতে নিখোঁজ হন।
কাতারি পত্রিকা আল আরবের এডিটর-ইন-চিফ আব্দুল্লাহ আল আতভাব নিখোঁজদের বিষয়ে আলজাজিরাকে বলেছেন, ‘কাতারের প্রতি বিদ্বেষ ছড়াতে ও “সন্ত্রাসী” আখ্যায়িত করে কাতারি নাগরিকদের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে সৌদি তাদের গুম করেছে।’
২০১৭ সালের ৫ জুন কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ করে চার উপসাগরীয় দেশ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর এবং বাহরাইন। গত বছর ওই চার আরব দেশ কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।
ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা এবং ২০১৪ সালে উপসাগরীয় দেশগুলোর গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) একটি চুক্তি লঙ্ঘন করে সন্ত্রাসবাদে অর্থ সহায়তা দেয়ার অভিযোগে কাতারের সঙ্গে স্থল, বিমান এবং সাগরপথ বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে এ ধরনের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে কাতার।
এসআর/পিআর