বিপ্লবের প্রতীক চে গুয়েভারার ৫১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
আজ ৯ অক্টোবর, বিপ্লবের প্রতীক ও কিউবা বিপ্লবের মহানায়ক চে গুয়েভারার ৫১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৬৭ সালের এই দিনে বলিভিয়ার শহর লা হিগুয়েরাতে দেশটির সেনাবাহিনী তাকে হত্যা করে।
বিপ্লবের অগ্নিপুরুষ ও গেরিলা নেতা হিসেবে বিশ্বজুড়ে আজও এই মহান বিপ্লবীর নামই ধ্বনিত হয়। বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে খ্যাতিমান সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবীদের অন্যতম তিনি।
মৃত্যুর পর চে’র শৈল্পিক মুখচিত্রটি একটি সর্বজনীন বিপ্লবের মুখচ্ছবি হিসেবে বিশ্বপ্রতীকে পরিণত হয়।
কিউবায় ফিদেল কাস্ট্রোর সঙ্গে সফল বিপ্লবের পর আরেকটি বিপ্লবের প্রত্যয় নিয়ে বলিভিয়ায় গিয়েছিলেন চে গুয়েভারা। সেখানে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র (সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি) মদদপুষ্ট বলিভিয়ান বাহিনীর কাছে ধরা পড়েন তিনি। পরে তারা গুলি করে হত্যা করে এই মহান বিপ্লবীকে। তবে চে গুয়েভারাকে হত্যা করা গেলেও তার আদর্শকে হত্যা করা যায়নি। মৃত্যুর পর তিনি সমাজতন্ত্র অনুসারীদের জন্য অনুকরণীয় আদর্শে পরিণত হন।
মৃত্যুর আগে তিনি বন্দি অবস্থায় হ্যান্ডক্যাফ পরিহিত হাত মুষ্টিবদ্ধ করে বলেছিলেন- ‘আমি জানি তোমরা আমাকে মারতে এসেছ। কাপুরুষ গুলি করো। তোমরা একজন মানুষকে হত্যা করছ মাত্র। বিপ্লবের মৃত্যু নেই।’
মৃত্যুর ৫১ বছর পরেও টাইম পত্রিকার বিংশ শতাব্দীর সর্বাপেক্ষা প্রভাবশালী ১০০ জন ব্যক্তির তালিকায় তার নাম প্রকাশিত হয়। আবার গেরিলা যোদ্ধার পোশাকে ১৯৬০ সালের ৫ মার্চ ‘গেরিলেরো হেরোইকো নামে’ আলবের্তো কোর্দার তোলা চে-র বিখ্যাত ফটোগ্রাফটিকে ‘বিশ্বের সর্বাপেক্ষা প্রসিদ্ধ ফটোগ্রাফ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
চে গুয়েভারার পুরো নাম ‘এর্নেস্তো গেভারা দে লা সেরনা’। জন্ম ১৯২৮ সালের ১৪ জুন। জন্মসূত্রে চে আর্জেন্টিনার নাগরিক। পেশায় ছিলেন একজন ডাক্তার এবং ফিদেল কাস্ত্রোর দলে চিকিৎসক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি অনুকরণীয় এক বিপ্লবীতে পরিণত হন।
কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের চে গুয়েভারার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, ‘চে তোমার মৃত্যু আমাকে অপরাধী করে দেয়/ আমার ঠোঁট শুকনো হয়ে আসে, বুকের ভেতরটা ফাঁকা/ আত্মায় অবিশ্রান্ত বৃষ্টিপতনের শব্দ/ শৈশব থেকে বিষণ্ন দীর্ঘশ্বাস.../ বলিভিয়ার জঙ্গলে নীল প্যান্টালুন পরা/ তোমার ছিন্নভিন্ন শরীর/ তোমার খোলা বুকের মধ্যখান দিয়ে/ নেমে গেছে/ শুকনো রক্তের রেখা...।’ কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মত চে’র স্মরণে আজও বিশ্বের লক্ষ, কোটি মানুষের মাথা নত হয়ে আসে।
এমএমজেড/জেআইএম