রাখাইন ঘুরে প্রথমবারের মতো প্রতিবেদন প্রকাশ জাতিসংঘের
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা ইউএনডিপি প্রথমবারের মতো গত সেপ্টেম্বরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সফর করেছিল। রাখাইনের ২৩টি গ্রাম এবং তিনটি গ্রাম্য এলাকা ঘুরে দেখেছেন ওই দুই সংস্থার সদস্যরা। এ বিষয়ে প্রাথমিক মূল্যায়ন প্রকাশ করেছেন তারা।
উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা শুরুর এক বছর পরে সেখানকার পরিস্থিতি দেখতে যাওয়ার অনুমতি পান ইউএনএইচসিআরের সদস্যরা। সেখানকার ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান তারা।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের বেশ কয়েকটি পুলিশ ও সেনাপোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। অভিযানের নামে সেখানে হত্যা, ধর্ষণ ও নিপীড়ন চালায় সেনা সদস্যরা। মিয়ানমারের নিপীড়ন থেকে বাঁচতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
ওই প্রাথমিক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের সংস্থা দু'টির পক্ষে বলা হয়েছে, প্রথম পদক্ষেপ সহজ করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের বিষয়টি সীমিত পরিসরে ছিল।
তবে যেহেতু বিস্তর পরিসরে তাদের রাখাইন পরিদর্শনের সুযোগ মেলেনি তাই ওই দুই সংস্থার সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা এটা উপলব্ধি করতে পেরেছেন যে সেখানে বসবাস করাটা কতটা চ্যালেঞ্জপূর্ণ। সংস্থা দু'টির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের টিমের সদস্যরা কয়েক সপ্তাহ ধরেই ওই অঞ্চলে সহিংসতার গুরুতর প্রভাব পর্যবেক্ষণ করছেন।
ওই অঞ্চলে মুসলিমরা ছাড়াও বেশ কিছু সংখ্যালঘু সম্প্রদায় স্বাধীনভাবে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যাওয়ার অনুমতি পান না। ভয় এবং আতঙ্কের কারণে শিক্ষাগ্রহণ, স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য মৌলিক সেবাও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে যোগাযোগও সীমিত হয়ে পড়ছে।
বিভিন্ন সম্প্রদায় একরকম বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এর ফলে মুসলিম সম্প্রদায়গুলোর সঙ্গে অন্যান্য সম্প্রদায়ের দূরত্ব থেকেই যাচ্ছে। তবে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, যেসব সম্প্রদায় কাছাকাছি বসবাস করছেন তারা নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া আবারও শুরু করেছেন।
ওই মূল্যায়ন টিমের সদস্যদের স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন সম্প্রদায়। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলার আগ্রহও দেখা গেছে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজনকে। তাদের মধ্যে কোন ধরনের বিদ্বেষ লক্ষ্য করা যায়নি।
শুক্রবার জাতিসংঘের সংস্থা দু'টি দ্বিতীয় পর্যায়ের মূল্যায়ণ শুরু করেছে। মাওংদাও, বুথিয়াডং এবং রাথেডাওং এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ভ্রমণের অনুমতি পেয়েছেন তারা।
টিটিএন/এমএস