৩৬ হাজার কোটি টাকার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা চুক্তি ভারত-রাশিয়ার
সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে এক বিএসএফ জওয়ানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে টানাপাড়েন শুরু হয়েছে। ভারত দাবি করেছে, পাক সেনাবাহিনীর বিশেষ দল বর্ডার অ্যাকশন টিম বড়সড় হামলার ছক কষছে। এরই মধ্যে নতুন একটি খবর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিল।
ভারতীয় পত্রিকা আনন্দবাজার বলছে, চলতি সপ্তাহেই ভারতের সঙ্গে রাশিয়া ৩৬ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকার এস-৪০০ ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা চুক্তি করবে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম সহযোগী ইউরি উসাকভের বরাত দিয়ে পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, দুুই দিনের সফরে আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিল্লি আসছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তার উপস্থিতিতেই নয়াদিল্লিতে এই চুক্তি সম্পন্ন হবে।
ভারতকে এই অত্যাধুনিক রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রি করা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে টালবাহানা। ভারতের রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ে বরাবরই নারাজ ছিল আমেরিকা। গত অাগস্টেই মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্তা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কিনলে দিল্লিকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে পারে। সম্প্রতি, বিশ্ববাজারে রুশ অস্ত্রের যোগান আটকাতে বিশেষ আইনও আনে আমেরিকা। যে সমস্ত দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনবে, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে তাদের ‘একঘরে’ করার কথাই বলা আছে এই আইনে। এই আইনের সাহায্যেই চীনের বিরুদ্ধে আর্থিক বিধিনিষেধ চাপিয়েছে আমেরিকা। রাশিয়ার কাছ থেকে সুখোই বিমান কেনার জন্য আমেরিকার বিরাগভাজন হয় বেইজিং।
ভারত অবশ্য বরাবরই মার্কিন হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কিনতে নিজের অবস্থানে অনড় ছিল। নিষেধাজ্ঞা আটকাতে গত সপ্তাহেই বিষয়টি নিয়ে আমেরিকার কাছে বিশেষ ছাড়ের আবেদন করে নয়াদিল্লি।
অন্যদিকে, এ নিয়ে ভারতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে জানিয়েছিল মস্কো। দীর্ঘদিন এই নিয়ে চলছিল টালবাহানা। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বক্তব্যে শেষ পর্যন্ত সেই জট কাটল বলেই মনে করা হচ্ছে। ভারতের হাতে আসছে ৩৬৬৬৭ কোটি টাকার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী অত্যাধুনিক রুশ সমরাস্ত্র।
২০০৭ সালে রাশিয়া প্রথম সামনে আনে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থা ৪০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্রকে চিহ্ণিত করতে পারে এবং একইসঙ্গে ৪৮টি শত্রু ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করে মাটিতে নামাতে পারে এস-৪০০। অত্যাধুনিক যেসব যুদ্ধবিমানকে রাডারে ধরা যায় না, তাদেরও চিহ্ণিত করতে পারে এই রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা।
বলা হচ্ছে, এই রুশ যুদ্ধাস্ত্র হাতে এলে নিশ্চিতভাবেই বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
এসআর/পিআর