ছবিতে ইন্দোনেশিয়ার ভূমিকম্প-পরবর্তী সুনামির ধ্বংসলীলা
ইন্দোনেশিয়ায় ৭ দশমিক ৫ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর উপকূলীয় পালু শহরে সুনামির আঘাত হানে। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ভূমিকম্পের পর ১০ ফুট উঁচু ঢেউ সুলাওয়াসি দ্বীপের পালু শহর যেন ভাসিয়ে নিয়ে যায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, পাহাড়সম উঁচু ঢেউ যখন উপকূলে আঘাত হানে তখন ‘বিচ ফেস্টিভ্যাল’ উপলক্ষে অনেকেই সৈকতে জড়ো হয়েছিলেন। যাদের বেশিরভাগই নিজেদের প্রাণ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কেউ কেউ উঁচু গাছে চড়ে নিজেদের রক্ষা করেছেন।
সুনামির পর স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্ধার তৎপরতা
শনিবার সমুদ্র তট থেকে অনেকগুলো মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এদিন সকালেও সুলাওয়াসি দ্বীপ একাধিকবার কেঁপে ওঠে। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা বিএনপিবি’র মুখপাত্র সুতোপো পুরও নুগরোহো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গতকাল ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়। কিন্তু ওই সময়ও লোকজন সৈকতে তাদের কাজকর্ম চালিয়ে যান। প্রকাণ্ড ঢেউ যখন উপকূলে আছড়ে পড়ে তখন তারা আর নিজেদের রক্ষা করতে পারেননি।
খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন আক্রান্তরা
ভূমিকম্প-পরবর্তী সুনামিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ‘অত্যন্ত ভয়াবহ’ উল্লেখ করে নুগরোহো বলেন, পালুর বেশিরভাগ বাড়িঘর, হাসপাতাল, শপিংমল ও হোটেল ধসে গেছে। সুনামিতে একটি সেতু ভেঙে ভেসে গেছে। ভূমিধসে পালুর প্রধান মহাসড়ক দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ধ্বংসস্তূপ থেকে প্রয়োজনীয় উপকরণ খুঁজে ফিরছেন এক ভুক্তভোগী
দুর্গত মানুষের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে দেশটির সেনাবাহিনী। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা সুনামির আঘাতের পরপরই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। খোলা আকাশের নিচে শত শত মানুষকে আশ্রয় নিতে দেখা যায়।
এদিকে সুনামির আঘাতে দুর্গতকালীন প্রায় সব অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি ভেঙে পড়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও। ফলে ব্যাহত হচ্ছে জরুরি চিকিৎসাসেবা।
ধ্বংসস্তূপের মধ্যে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে মসজিদের মিনার
২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ সুনামির আঘাত হানে ইন্দোনেশিয়ার উত্তরাঞ্চলের দ্বীপ সুমাত্রার আচেহতে। ৯ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প মেগাথ্রাস্টের পরপরই সৃষ্টি হয় ভয়াবহ সুনামি। যা সোমালিয়ার উপকূলীয় অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
খোলা আকাশের নিচে আহতের দেয়া হচ্ছে চিকিৎসাসেবা
ওই সুনামি ভারত মহাসাগরের অনেক দেশে আঘাত হানে। কেবল ইন্দোনেশিয়াতেই প্রাণহানি হয় এক লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষের। এতে বিভিন্ন দেশের আরও ৫০ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়। সবমিলিয়ে আনুমানিক মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে যায়।
সবকিছু হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন এক নারী
সুনামির আঘাতে হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের খুঁজে ফিরছে শিশুটি
সুনামির আঘাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি মসজিদ
সুনামির আঘাতের পর ত্রাণ নিয়ে এগিয়ে এসেছে দেশটির সেনাবাহিনী
সুনামির আঘাতের পর প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত পালু শহর
সুনামির আঘাতে বিধ্বস্ত পালু শহরের একটি মার্কেট
সুনামির পর উপকূলীয় তটে রেখে যাওয়া ধ্বংসলীলা
সুনামির আঘাতের পর শনিবার সকালে উদ্ধার করা এক মরদেহ
সুনামির আঘাতের পর রেখে যাওয়া ধ্বংসলীলা
বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা
সুনামির আঘাতের আগে যেমন ছিল পালু শহরের ব্রিজটি
সুনামির পর ধ্বংসপ্রাপ্ত ব্রিজ
এমএআর/আরআইপি