ইরানে পশ্চিমা কূটনীতিকদের তলব
ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত এবং ব্রিটিশ চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে রোববার তলব করেছে ইরান। তেহরানের অভিযোগ, এই রাষ্ট্রগুলো আহভাজ শহরে সামরিক কুচকাওয়াজে জঙ্গি হামলায় মদদ দিয়েছে।
এর আগে শনিবার হামলার পরপরই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ টুইটারে জানিয়েছিলেন, বন্দুকধারীরা ‘বিদেশি একটি শক্তির অর্থে নিয়োগপ্রাপ্ত, প্রশিক্ষিত এবং সশস্ত্র জঙ্গি।’
পরে আল-আহভাজিয়েহ নামের সুন্নি মতাবলম্বী জঙ্গি সংগঠন হামলার দায় স্বীকার করে। শনিবার সামরিক কুচকাওয়াজে এ হামলায় অন্তত ২৯ জন নিহত ও ৫৩ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন।
ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস ও ব্রিটেনের বিরুদ্ধে জঙ্গি সংগঠনটির সদস্যদের সহায়তার অভিযোগ এনেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আল-আহভাজিয়েহ সংগঠনটিকে কালো তালিকাভুক্ত না করার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেবে না ইরান সরকার।
এর আগে, বন্দুকধারীদের ‘তাকফিরি’ বলে উল্লেখ করে আইআরএনএ। ইসলামিক স্টেটের সদস্যদের এই নামে ডাকা হতো। পরে আইএসের মুখপত্র আমাকের মাধ্যমে সংগঠনটি দায় স্বীকার করলেও তা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
ইরানের আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা ফার্স নিউজ অ্যাজেন্সি বলছে, মোটরসাইকেলে চড়ে আসা দুই বন্দুকধারী ওই হামলা চালিয়েছে।
আঞ্চলিক উত্তেজনা
শনিবারের টুইটে কিছু ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্র’ ও তাদের মার্কিন প্রভুকে এই হামলার জন্য দায়ী করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনার মাধ্যমে আঞ্চলিক প্রভাব বাড়াতে ইরান ও সৌদি আরব কতটা মরিয়া, তা আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
তেহরান বরাবরই মধ্যপ্রাচ্যে রিয়াদকে পেছন থেকে সমর্থন দিয়ে যাওয়ায় ওয়াশিংটনকে দোষারোপ করে আসছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইরানের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দিন দিন খারাপের দিকেই যাচ্ছে। ইরানের সাথে পশ্চিমা ক্ষমতাধর দেশগুলোর পরমাণু চুক্তি থেকে নাম প্রত্যাহার ও নতুন করে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের পর তা বাজে দিকে মোড় নিয়েছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি আহভাজে হামলাকে ‘এই অঞ্চলের মার্কিন সমর্থিত সরকারগুলোর ষড়যন্ত্র’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। ইরানকে অস্থিতিশীল করতেই এই ‘চক্রান্ত' বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের এক মুখপাত্র হামলাকারীরা ‘সৌদি সমর্থিত’ বলে অভিযোগ করেছেন। ইরানের খুজেস্তান প্রদেশের রাজধানী আহভাজ। তেল-সমৃদ্ধ এই এলাকায় আরব বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অতীতে অনেকবার তেলের পাইপলাইনে হামলা চালিয়েছে। শিয়া অধ্যুষিত ইরানের এই অঞ্চলে সুন্নিদের প্রাধান্য বেশি৷ আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসও সুন্নি মতাদর্শে বিশ্বাসী।
গত বছরের ৭ জুন রাজধানী তেহরানে পার্লামেন্ট ভবনে হামলা চালায় আইএস জঙ্গিরা। হামলা হয় আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির মাজারেও। সেসব হামলায় অন্তত ১৮ জন নিহত ও ৫০ জন আহত হন।
এসআইএস/জেআইএম