নারীদের কাছে আরও সন্তান চান তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট
নারীদের কাছ থেকে বেশি বেশি সন্তান প্রত্যাশা করেছেন তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলি। এজন্য নারীদের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা থেকে সরে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। দেশটিতে আরও জনসংখ্যা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, নারীরা এখন থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি পরিহার করতে পারেন।
একই সঙ্গে, নারী আইনপ্রণেতাদের কৃত্রিম নখ ও চোখের পাপড়ি ব্যবহার, শর্ট ড্রেস ও জিন্স পরাও নিষিদ্ধ করেছে পার্লােমেন্ট। খবর বিবিসির।
দেশটিতে বর্তমান জনসংখ্যা ৫ কোটি ৩০ লাখ। তবে ৪৯ ভাগ জনগোষ্ঠীর দৈনিক আয় ২ ডলারেরও কম। অপরদিকে দেশটিতে গড়ে একজন নারীর পাঁচের অধিক সন্তান রয়েছে, যা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাগুফুলির এ আহ্বানের পরদিন পার্লামেন্টে নারী আইনপ্রণেতাদের কৃত্রিম নখ ও চোখের কৃত্রিম পাপড়ি ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছেন স্পিকার জব দুগুই। ‘স্বাস্থ্যগত বিষয়টি মাথায় রেখে’ এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে তিনি এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।
নিষেধাজ্ঞায় আরও বলা হয়েছে, নারী আইনপ্রণেতারা শর্ট ড্রেস ও জিন্স পরে পার্লামেন্টে যেতে পারবেন না। এমনকি পার্লামেন্ট পরিদর্শনে আসা নারী পরিদর্শকদেরও নতুন ‘ড্রেস কোড’ মেনে চলতে হবে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিসি জানায়, রোববার এক র্যালিতে এ মন্তব্য করেন মাগুফুলি। তিনি বলেন, ‘যারা পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ করেন, আমরা দেখেছি তারা অলস প্রকৃতির হয়। তারা বড় পরিবারের সদস্যদের খাওয়ানোর জন্য কঠার পরিশ্রম করতে চায় না। এজন্য তারা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করে এবং একটি-দুটি সন্তান নিয়েই পরবর্তী সন্তান নেয়া থেকে বিরত থাকে।’
‘আমি ইউরোপসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গিয়েছি। সেখানে দেখেছি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ফল কত ভয়াবহ হতে পারে। কিছু দেশের জনসংখ্যা কমে যাচ্ছে। এজন্য এসব দেশে মানবসম্পদ ঘাটতি দেখা দিয়েছে’ -যোগ করেন মাগুফুলি।
তবে মাগুফুলির এ আহ্বানকে দেশটির স্বাস্থ্যনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেছেন পার্লামেন্টের বিরোধী সদস্য সেসিল ওয়াম্বি।
তিনি বলেন, ‘যদি প্রেসিডেন্ট মাগুফুলি বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে নিয়ে মন্তব্য করে থাকেন তাহলে তার স্বাস্থ্য বীমা নীতি পরিবর্তন করতে হবে। ওই নীতিতে পরিবার প্রতি চার সন্তানের বিপরীতে ১০ সন্তান নেয়ার কথা বলা হয়েছে।’
২০১৬ সালেও একই আহ্বান করেছিলেন তানজানিয়া প্রেসিডেন্ট। অবৈতনিক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা চালু অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন- নারীরা এখন থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে পারেন। কারণ শিক্ষা এখন সবার জন্য অবৈতনিক।’
২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার পর থেকে অনেকগুলো বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মাগুফুলি। গত বছর তিনি প্রস্তাব করেন- কোনো সন্তানসম্ভবা স্কুলছাত্রী সন্তান জন্ম দিলেই তাকে স্কুলে যাওয়া থেকে বিরত রাখা হবে।
এসআর/পিআর