বিয়ে করতে চান ভারতের প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের আমলা ঐশ্বরিয়া
ভারতে সরকারের উচ্চ পদে চাকরি করা প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ঐশ্বরিয়া ঋতুপর্ণা প্রধান বিয়ে করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। সম্প্রতি ভারতে সর্বোচ্চ আদালতে সমকামিতার বৈধতা দেওয়ার পর মনের কোণে দীর্ঘদিনের লালিত এ স্বপ্নের পূর্ণতা দিতে চান তিনি।
২০১৫ সাল পর্যন্ত পুরুষের পরিচয়েই পরিচিত ছিলেন ঐশ্বরিয়া। তার নাম ছিল রতিকান্ত প্রধান। ২০১০ সালে পুরুষ পরিচয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন তিনি। ২০১৪ সালে ভারতে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নাগরিক হিসেবে মৌলিক অধিকার আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়। এরপরই নিজের আসল পরিচয় তুলে ধরেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে নাম পাল্টে ফেলেন ঐশ্বরিয়া ঋতুপর্ণা প্রধান।
বর্তমানে উড়িষ্যা রাজ্য সরকারের কর বিভাগের ডেপুটি কমিনার পদে কর্মরত রয়েছেন। ঐশ্বরিয়াই (৩৪) ভারতের প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ যিনি সরকারের উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। এবার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের পূর্ণতা দিতে বয়ফ্রেন্ডকে বিয়ে করতে চান তিনি।
ঐশ্বরিয়া গত দুই বছর ধরে তার প্রেমিকার সঙ্গে একই ছাদের নিচে বাস করছেন। এর এক বছর আগেই তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন তার প্রেমিক। কিন্তু তখন সমকামকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হওয়ায় সেই প্রস্তাবে রাজি হননি ঐশ্বরিয়া। এবার সে বাধা কেটে যাওয়ায় ভারতের স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের আওতায় প্রেমিককে বিয়ে করতে চান তিনি।
হিন্দুস্তান টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ঐশ্বরিয়া জানান, ‘স্কুলে শিক্ষকেরা আমাকে নিয়ে উপহাস করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার বন্ধুরাই আমাকে যৌন হয়রানি করেছে। বাবা আমাকে বাধ্য করতেন পুরুষালি আচরণ করতে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে আমি নিজেকে নারী মনে করতাম। মাঝে মধ্যে আমি মায়ের সোনার গয়না পরতাম। আমার ভালো লাগতো।’
তবে এখন নিজের পরিচয় নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই ঐশ্বরিয়ার। চান প্রেমিককে নিজের জীবনসঙ্গীর মর্যাদা দিতে। ভবিষ্যতে একটি কন্যা শিশুও দত্তক নিতে চান ঐশ্বরিয়া। তার স্বপ্ন তাদের মেয়ে বড় হয়ে মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। নিজের পরিচয় দেবে একজন তৃতীয় লিঙ্গের মায়ের সন্তান হিসেবে।
আরএস/পিআর