১২ বছর পর ফুটলো এ ফুল
ভারতের কেরালাবাসীর কাছে এই বছরটা খুব উল্লেখযোগ্য ছিল। বলা যায়, এই বছরটার জন্যই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন তারা। কিন্তু আগস্টের ভয়াবহ বন্যা পুরো পরিস্থিতিই বদলে দিয়েছে। আশা বদলে গেল হতাশায়। বন্যায় ভেসে গেছে সবকিছু। বাড়ি-ঘর, সম্পদ তলিয়ে গেছে। তবে সব হারিয়েও নতুন করে বাঁচার জন্য লড়াই শুরু করেছে রাজ্যবাসী। বন্যার সেই স্মৃতি অবশ্য ধীরে ধীরে কাটাচ্ছে কেরালা।
এদিকে কেরালা যার জন্যে অধীর আগ্রহে ছিল সে অবশ্য তার কথা রেখেছে। বারো বছর পরে আবার কেরালার কাননদেবন পাহাড়ে ফুটতে শুরু করেছে নীলকুরিঞ্জি ফুল। বারো বছর পর পর এই ফুল ফোটে। সময় আগস্ট থেকে অক্টোবর। এই ফুল দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটক ভিড় করেন কেরালায়। তাই এই ফুলই এখন তাদের আশা-ভরসা। নীলকুরিঞ্জিকে ঘিরেই ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে রাজ্যটি।
মুন্নারের আশেপাশের অঞ্চলে ক্রমশ ফুটতে শুরু করেছে এই ফুল। বৃষ্টি কমে এখন রোদ উঠেছে। পরিষ্কার আকাশ আর অল্প-স্বল্প বৃষ্টিতেই ডানা মেলতে চাইছে নীলকুরিঞ্জি।
মুন্নারের উপকণ্ঠের এরাভিকুলম জাতীয় উদ্যানের মুখ্য ওয়ার্ডেন আর লক্ষ্মী বলেন, ‘বৃষ্টি কমেছে, রোদ উঠেছে। এর ফলে এরাভিকুলম, রাজামালাই এবং কান্থালুর উদ্যানে এই ফুল ফুটতে শুরু করেছে। আবহাওয়া যদি এ রকমই থাকে তা হলে আগামী দশ দিনের মধ্যেই পুরো পাহাড় নীল হয়ে যাবে এই ফুলে।’
সমুদ্রতল থেকে ১৩০০ মিটার উচ্চতার ওপরে এই ফুলের দেখা মেলে। মুন্নারের উচ্চতা ১৬০০ মিটার, তাই এখানেই এই ফুল দেখা যায় সব থেকে বেশি। নিয়ম করে বারো বছর পরে এই ফুল ফোটে। শেষ বার এই ফুল ফুটেছিল ২০০৬ সালে। এই ফুলকে ঘিরে অন্তত বিশ লাখ মানুষ মুন্নারে পাড়ি জমান।
এমনিতে বন্যায় মুন্নারের খুব কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ধসের ফলে শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। এর ফলে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুন্নারে পর্যটকদের যাওয়ার ওপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল কেরালা সরকার। সেই নিষেধাজ্ঞা এখন তুলে নেয়া হয়েছে। ফলে ধীরে ধীরে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে এই শৈলশহরে।
কেরালার পর্যটনমন্ত্রী কদকমপল্লী সুরেন্দ্রণ জানিয়েছেন, কিছু রাস্তা এখনও খারাপ রয়েছে সেগুলি দ্রুত সারিয়ে তোলা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘মুন্নারকে পর্যটন মানচিত্রে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত রাস্তা সারিয়ে ফেলা হবে। এই মুহূর্তে সব ব্রিজগুলো সারানোর কাজ চলছে।’
মুন্নারের বাসিন্দাদের আশা, সব বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে দিন পনেরোর পর থেকে পর্যটকদের ঢল নামবে এই পাহাড়ি শহরে।
এমবিআর/এমএস