নতুন পাক প্রেসিডেন্টের বাবা ছিলেন নেহেরুর দাঁতের ডাক্তার
পাকিস্তানের নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডা. আরিফ আলভির সঙ্গে ভারতের অনেক আগে থেকেই সুসম্পর্ক রয়েছে। কারণ তার বাবা ছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর দাঁতের ডাক্তার। তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের ওয়েবসাইটে দেওয়া তার সংক্ষিপ্ত জীবনীতে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ আলভি পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে একজন। মঙ্গলবার পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তিনি।
৬৯ বছর বয়সী সাবেক এই দাঁতের ডাক্তার পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদপ্রার্থী পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) আইতাজ আহসান এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) ফজলুর রহমানকে হারিয়ে দেশটির ১৩তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
শুধু তার বাবা নেহেরুর দাঁতের ডাক্তার ছিলেন তাই নয় ভারতের সঙ্গে আরও সম্পর্ক রয়েছে আলভির। তিনি হলেন পাকিস্তানের আরেক প্রেসিডেন্ট যার পরিবার ১৯৪৭ সালের দেশবিভাগের সময় ভারত থেকে পাকিস্তানে চলে যায়। এর আগে তার পূর্বসুরী পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি মামনুন হুসাইন এবং পারভেজ মোশারফের পরিবারও ভারত থেকে পাকিস্তানে স্থানান্তরিত হয়ে বসবাস করেন। মামনুন হুসাইনের পরিবার আগ্রাতে এবং পারভেজ মোশাররফের বাবা-মা নতুন দিল্লিতে বসবাস করতেন।
আলভির বাবা ডা. হাবিব উর রহমান এলাহী দেশভাগের আগে নেহেরুর দাঁতের বিশেষজ্ঞ ছিলেন। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফে দেওয়া নবনির্বাচিত এ রাষ্ট্রপতির সংক্ষিপ্ত জীবনী অনযায়ী এসব তথ্য জানা যায়।
ওয়েবসাইটে লেখা আছে, ডা. এলাহী আলভি জওহরলাল নেহেরুর দন্ত বিশেষজ্ঞ ছিলেন এবং তার পরিবারের কাছে ডা. এলাহীকে লেখা নেহেরুর চিঠিও রয়েছে।
আলভির পুরো নাম ডা. আরিফুর রহমান আলভি। তার পরিবার দেশভাগের পর পাকিস্তানে বসবাস শুরু করলে ১৯৪৭ সালে করাচিতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার মতো তিনিও দন্ত বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেন। তার বাবা দেশভাগের আগে ভারতে চিকিৎসার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। পাকিস্তানে আসার পর করাচির সাদ্দারে তিনি কাজ শুরু করেন। এছাড়া তার বাবার সঙ্গে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর পরিবারেরও সম্পর্ক ছিলো।
আলভি পাঁচ দশক আগে লাহোরের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভূক্ত মন্টমনরেন্সি কলেজ অব ডেন্টিস্ট্রিতে পড়ার সময়ই রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। তিনি জামাত-ই-ইসলামী দলের ছাত্রনেতা ছিলেন। আইয়ুব খানের সেনাশাসনের বিরুদ্ধে তিনি আন্দোলন করেছিলেন।
পিটিআই এর ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, লাহোরের মল রোডের একজন প্রতিবাদকারী হিসেবে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। এখনও তার ডান হাতে সেই বুলেট রয়েছে। যা পাকিস্তানের গণতন্ত্র আন্দোলনের স্বাক্ষী।
১৯৭৯ সালে জামায়াত-ই-ইসলাম দলের হয়ে তিনি নির্বাচন করে হেরে যান। পরে তিনি দলটি থেকে বাদ পড়েন এবং ১৯৯৬ সালে পিটিআইএর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে দলটিতে যোগ দেন। পিটিআই এর হয়ে ১৯৯৭ সালে নির্বাচনে অংশ নিয়ে হেরে যান তিনি। ২০০৬ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি পিটিআই এর মাহাপরিচালক ছিলেন। এরপর ২০১৩ সালের নির্বাচনে করাচীর একটি আসন থেকে তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
টিটিএন/পিআর