স্মার্টফোন কিনতে কিশোরের রক্ত বিক্রি!
ভারতের উত্তরপ্রদেশে স্মার্টফোন কিনতে ও অতিরিক্ত পকেট খরচের আশায় রক্ত বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে তিন কিশোর। উত্তরপ্রদেশের কোহলি ব্লাডব্যাংকে অভিযান চালিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানতে পারেন, ওই তিন কিশোর যারা রক্ত দিয়েছিল তারা রক্ত দেওয়ার জন্য শারীরিকভাবে যোগ্য নয়। রোববার ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
টাকার লোভে রক্ত দেওয়ার অভিযোগে ওই তিন কিশোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে সিলগালা করে দেয়া হয়েছে ব্লাডব্যাংকটি।
গ্রেফতার বালকদের একজনের বয়স ১৪ বছর। তিনি জানান, কয়েকদিন ধরে একটি সেল ফোন কেনার জন্য তিনি টাকা জমাতে শুরু করেন। সেই সময় ওই ব্লাডব্যাংক থেকে একজন ফোন করে তাকে টাকার বিনিময়ে রক্ত দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। অতিরিক্ত টাকার লোভেই রাজি হয়ে যান তিনি।
ওই কিশোর আরো জানান, বাবা মারা যাওয়ার পর তার মা একটি ক্লিনিকে তিন হাজার টাকার বিনিময়ে চাকরি করেন। মাকে সাহায্য করতে তিনিও একটি ছোটখাটো কাজ করেন। কিন্তু দুজনের উপার্জনে পাঁচজনের সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ে।
গজনি নামের ওই ব্যক্তি টাকার লোভ দেখাতেই আর ওই কিশোর দ্বিতীয়বার ভাবেনি। পাশাপাশি বিজয় আরো জানায় যে, ওই ব্যক্তি তাকে আশ্বাস দিয়েছিল, রক্ত দেওয়ার পরও সে দুর্বল বোধ করবে না। তার শারীরিক কোনও ক্ষতিও হবে না। ভারতে রক্ত দেওয়ার আইনত বয়স ১৮ বছর। এবং রক্তদাতার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমপক্ষে ১৩ হতে হবে। কিন্তু স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে জানতে পারেন, যে ৩ জন রক্ত দিয়েছে তাদের বয়স ১৮ বছরের কম এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১৩-র নিচে।
ওই কিশোরের সঙ্গে স্নেহাশিস নামে এক নাবালকও রক্ত দেয় ব্লাডব্যাংকে। তবে এটাই তার প্রথমবার ছিল না। এর আগে আরও দুবার রক্ত দিয়েছে স্নেহাশিস, জানিয়েছে মাকে সাহায্য করার জন্য এক বছর ধরে চাকরি খুঁজছিল সে। তখনই এই প্রস্তাব মেলে। রক্ত বিক্রি করে তার পকেটমানি চালানোর মতো টাকা ভালই আসছিল। তাই সে এই কাজে রাজি হয়। তৃতীয় কিশোরের বাবা তাকে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে দেননি।
এসআইএস/পিআর