বাবার মৃত্যুর ৩ বছর পর জন্মাল ছেলে
বাবার মৃত্যুর তিন বছর পর, তার মৃত্যুদিনেই স্ত্রীর কোল আলো করে এল এক ছেলে। এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের মুম্বাইয়ের জসলোক হাসপাতালে। সুপ্রিয়া জৈন নামে ৩০ বছর বয়সের ওই তরুণী এজন্য চিকিৎসক, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
জয়পুরের বাসিন্দা হলেও গৌরব এবং সুপ্রিয়া, দু’জনই কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুতে থাকতেন। বিয়ের পাঁচ বছর পর সন্তানের কামনায় চেষ্টা শুরু করেন তারা। কিন্তু স্বাভাবিক পদ্ধতিতে সন্তান জন্ম দেয়া সম্ভব না হওয়ায় ২০১৫ সালে সন্তান ধারণের আধুনিক প্রযুক্তি আইভিএফ'র সাহায্য নিতে শুরু করে এই দম্পতি।
চিকিৎসা চলাকালীনই কর্নাটকের হুবলির কাছে ট্রাক দুর্ঘটনায় মারা যান গৌরব। স্বামীর মৃত্যুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পর শ্বশুরবাড়ি এবং বাবারবাড়ির কাউকে কিছু না জানিয়েই সুপ্রিয়া সিদ্ধান্ত নেন তিনি গৌরবের সন্তানের জন্ম দেবেন।
আরও পড়ুন : মৃত শিশুকে বাঁচাতে তোড়জোড় চললো দেড়দিন
ভারতীয় একটি দৈনিক বলছে, সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী এক বন্ধুর পরামর্শে মুম্বাইয়ের চিকিৎসক ফিরুজা পারিখের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সুপ্রিয়া। এজন্য শারীরিক ধকলের সঙ্গে আর্থিক খরচও বহন করতে রাজি সুপ্রিয়া জসলোক হাসপাতালের কাছে নিজের থাকার অস্থায়ী বন্দোবস্ত করেন।
ফিরুজা বলেন, যেহেতু এ ধরনের ঘটনায় শুধু শারীরিকই নয়; মানসিক ধকলও খুব বেশি হয় সেজন্য তারা সুপ্রিয়াকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, প্রথমে মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে। সুপ্রিয়া সেই প্রক্রিয়া পার হওয়ার পর শুরু হয় আইভিএফ পদ্ধতিতে শিশুর জন্মের প্রক্রিয়া।
আরও পড়ুন : প্রেমিকার রাগ ভাঙাতে ৩০০ ট্রাফিক সিগনালে ‘সরি’
ওই চিকিৎসক বলেন, বেশ কয়েকবার তাদের পরীক্ষা ব্যর্থ হয়েছিল। এবার ব্যর্থ হলে গৌরবের শুক্রাণু নষ্ট হয়ে যেত। অবশেষে সারোগেট পদ্ধতিতে ফল মেলে। সুপ্রিয়ার হাতে তার সন্তানকে তুলে দিতে পেরে খুশি জসলোক হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
এর আগে গৌরবের মৃত্যুবার্ষিকীতে বেঙ্গালুরু ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতেন সুপ্রিয়া। এবছরও তিনি ইন্দোনেশিয়ার বালিতে ছিলেন। তবে দেশের বাইরে থাকায় জসলোক হাসপাতাল থেকে তাকে ফোন করে জানানো হয় তার সন্তান জন্মেছে।
দেরী না করে দ্রুত দেশে ফিরে আসেন সুপ্রিয়া। স্বামীর মৃত্যুবার্ষিকীতে তার সন্তানকে কোলে পেয়ে জানালেন, তিনি শুধু সন্তান চাননি, চেয়েছিলেন গৌরবের সন্তান।
এসঅাইএস/এমএস