ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

ধূমপানের চেয়েও ক্ষতিকর ‘খারাপ বস’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৩:২২ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০১৮

চাকরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির বস। তার অধীনেই কর্মচারীরা কাজ করেন। একজন ভালো বস যেমন তার কর্মীদের সঠিক দিক নির্দেশনা দেন তেমনি একজন খারাপ বসের আচরণের কারণে কর্মীরা তাদের মনোবল হারান।

এক গবেষণায় দেখা গেছে ৭৫ ভাগ আমেরিকান নাগরিকের কর্মক্ষেত্রে চাপের কারণ তাদের বস। কুয়ার্টজ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে যে, একজন কর্মীর জন্য তার বস ধূমপানের চেয়েও ক্ষতিকর হতে পারেন।

ওই গবেষণায় আরও বলা হয়েছে যে, আপনি যতদিন এমন কারো অধীনে কাজ করবেন যিনি সারাক্ষণ আপনাকে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রাখেন, আপনি আপনার শরীর এবং মানসিক স্বাস্থ্যের তত বেশি ক্ষতি করবেন।

কুয়ার্টজ এর তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকান সাইকোলজি অ্যাসোসিয়েশন বলছে ৭৫ ভাগ আমেরিকান বিশ্বাস করেন, তাদের প্রচণ্ড চাপের কারণ তাদের বসেরা। তবুুও ৫৯ ভাগ কর্মীই চাকরি ছেড়ে যান না। সেসব বসের অধীনেই কাজ করে যাচ্ছেন।

পরিসংখ্যান বলছে, যেসব কারণগুলোর জন্য কর্মীরা সাধারণত অসুখী থাকেন তারা ধীরে ধীরে সেসব বিষয়গুলোর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে যান। সে কারণেই চাকরি ক্ষেত্রে এসব প্রতিকূলতা তারা মানিয়ে নিতে পারেন।

আবার অনেকেই এগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন না বলে ভালো চাকরির পরিবেশ আছে এমন কোথায় চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এতে করে তাদের অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে।

যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল এবং স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির এক গবেষণা বলছে, খারাপ বস একজন কর্মীর শারীরিক এবং মানসিক ক্ষতির জন্য দায়ী বা সিগারেটের চেয়েও ক্ষতিকর। ২শ জনের ওপর গবেষণা করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

কর্মক্ষেত্রে চাপের অন্যতম কারণ হলো চাকরি হারানোর ভয়। যাদের মধ্যে এ ধরনের চাপ থাকে তারা তাদের সহকর্মীদের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি স্বাস্থ্যের সমস্যায় ভোগেন।

যেসব চাকরির চাহিদা রয়েছে সেগুলোতে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, কর্মীরা যতটুকু পারবে তার চেয়েও তাদের কাছ থেকে বেশি কিছু আশা করা হয়। এটা স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ ঝুঁকি বাড়ায়।

তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় বসের রাগের পেছনেও যথেষ্ঠ কারণ রয়েছে। একজন ভালো বসও কর্মীদের আচার আচরণের কারণে অনেক সময় বিরক্ত হয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেন। সঠিক সময়ে কর্মীরা তাদের কাজ শেষ করতে না পারলে বা কাজের গুরুত্ব না বুঝলে বসের রেগে যাওয়া বা খারাপ আচরণ করাটা খুবই স্বাভাবিক।

boss

অনেক ক্ষেত্রেই বস আক্রমণাত্মক, নিজের প্রতি বেশি ইতিবাচক বা কখনও কখনও হিংসাত্মক আচরণ করে বসতে পারেন। একজন খারাপ বস অনেক সময় তার কর্মীদের বলেন যে, ‘একটা চাকরি পেয়েছেন এটাই আপনার সৌভাগ্য বা আমি না থাকলেই সবাই যার যার ইচ্ছামতো চলে।’ অনেক কর্মীই হয়তো বসের এসব কথা হজম করতে পারেন না। এগুলো তাদের শারীরিক এবং মানসিক চাপ বাড়ায়। তবে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন করে আবারও কিছু শুরু করাটা এতটা সহজও নয়। তাছাড়া অনেকেই এগুলোতে অভ্যস্ত হয়ে যান এবং এটা থেকেই প্রেরণা খুঁজতে চেষ্টা করেন।

তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় বস ব্যতিক্রম আচরণও করেন। যেমন কাজের সময় রাগারাগি বা চেচিয়ে কথা বলেন কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই আবার হাসি-ঠাট্টা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে ফেলেন। ফলে তার কর্মীরা জানেন যে তিনি হুট করে রেগে গেলেও সেটা তাদের জন্য ভয়াবহ কিছু না। আসলে তিনি এমনটা করেন যেন সবাই সঠিক সময়ে নিজের দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করেন এবং কাজের গুরুত্ব বুঝতে পারেন। এমন বসকে তার কর্মীরা যথেষ্ঠ ভালোবাসেন এবং শ্রদ্ধা করেন।

তবে পেশার ক্ষেত্রে এসব সংকট খুব সহজেই কাটিয়ে ওঠা যায় যদি সাধারণ কিছু কৌশল অবলম্বণ করা যায়। প্রতিদিন নিজের কাজের লক্ষ্য ঠিক করে একটি লিস্ট তৈরি করা উচিত এবং সেগুলো একে একে শেষ করতে হবে। নিজের কাজ সময় মতো শেষ করার অনুভূতি আপনাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। এর ফলে বসের রেগে যাওয়ার সম্ভাবনাও আর থাকবে না। ফলে কর্মক্ষেত্রে স্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করবে।

ছুটির দিনগুলোতে ইমেইল এবং অফিসের ফোন বন্ধ রাখুন। এটা আপনার ব্যক্তি জীবনকে উপভোগ করতে সহায়তা করবে। ফলে আপনি যখন আবার অফিস শুরু করবেন তখন নতুন উদ্যোমে কাজের প্রেরণা পাবেন। কর্মক্ষেত্র এবং ব্যক্তি জীবনকে কখনই গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। যখন অফিসের কাজ করবেন তখন ব্যক্তিগত কোনো কাজ করে সময় নষ্ট না করে আগে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো শেষ করতে হবে।

টিটিএন/এমএস

আরও পড়ুন