ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

নির্বাচনে জয়ের আভাস পাচ্ছেন ইমরান খান?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৫:৪২ পিএম, ২১ জুলাই ২০১৮

পাকিস্তানের আসন্ন নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন দেশটির ক্রিকেট তারকা থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া ইমরান খান। বর্তমানে দেশটির অন্যতম প্রধান বিরোধী রাজনীতিকদের একজন তিনি।

ইমরান খান বলেছেন, ২৫ জুলাইয়ের জাতীয় নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা হারবেন তাদের অতীত কৃতকর্মের জন্য। এই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কি-না সে নিয়ে পাকিস্তানে যে উদ্বেগ রয়েছে তাও তিনি নাকচ করে দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, অন্য দলগুলো বেশ হঠাৎই বলতে শুরু করেছে যে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। এর কারণ, জনমত জরীপে দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ এগিয়ে রয়েছে। তারা ইতিমধ্যেই, ভাগ্যের লিখন দেখতে পাচ্ছে।

গত পাঁচ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা নওয়াজ শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) সমর্থক ও দেশটির মানবাধিকার কর্মীরা অভিযোগ করছেন, ইমরান খানের দলকে জেতাতে দেশটির সেনাবাহিনী নির্বাচনের ফল সাজাচ্ছে। পাকিস্তানে এবারের নির্বাচনকে মূলত এ দুটি দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা বলে মনে করা হচ্ছে।

ইমরান খান বলেছেন, পাকিস্তানের উত্থান মাথায় রেখেই নির্বাচনের প্রচারণা চালিয়েছে তার দল। পাকিস্তানের নির্বাচনে দেশটির দুর্নীতি দমনকে তার প্রধান নীতি হিসেবে ব্যবহার করছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী নওয়াজ শরীফকে এ মাসের শুরুতে দশ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির দুর্নীতি দমন আদালত।

গত ১৩ জুলাই যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেই গ্রেফতার হন নওয়াজ শরীফ ও তার মেয়ে। ওই দিনই তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। গত বছর দুর্নীতির অভিযোগে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন।

ইমরান খান বেশ কিছুদিন ধরে যে অভিযোগে তিনবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা নওয়াজ শরীফের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি করছিলেন, সেই অভিযোগেই তার সাজা হয়। সাবেক এই ক্রিকেট তারকা বলেন, দুর্নীতির কারণে একটি দেশের ব্যয়ভার বহন করার অর্থ থাকে না, মানব উন্নয়নের জন্য অর্থ থাকে না। এ সম্পর্কে এই মামলাটি জনসচেতনতা তৈরি করেছে।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নওয়াজ শরীফের কারাদণ্ডের পেছনের কারণ আসলে তিনি ক্ষমতায় থাকাকালীন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতি ও নিরাপত্তা ইস্যুতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিলেন। পাকিস্তান রাষ্ট্র জন্মের অর্ধেকটা সময়ই দেশটির সবকিছুর নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করেছে সেখানকার সেনাবাহিনী।

নওয়াজ শরীফ দাবি করেছেন, তার দল যাতে জয়ী না হয় তাই দেশটির সেনাবাহিনী ভোটের আগেই ফল কারচুপির কার্যকলাপে নেমেছে। তার দলের বেশ কয়েকজন প্রার্থী অভিযোগ করে বলেছেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের দল ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছে।

সাংবাদিকরা দাবি করেছেন, নওয়াজ শরীফ সম্পর্কে কোন ধরনের সহানুভূতি দেখানো প্রতিবেদন না করতে তাদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। লাহোরে একটি সমাবেশে ইমরান খানের সমর্থকরা বলেছেন, দুর্নীতির দায়ে যে নওয়াজ শরীফের সাজা হয়েছে, সেদিক থেকে জনগণের মনোযোগ সরিয়ে নিতে এসব গল্প ফাঁদছে তার দল।

পাকিস্তানে রাজনীতির একটি সংস্কৃতি হল দলের নেতারা বংশগতভাবে এর সাথে জড়িত। ইমরান খানের সেই ইতিহাস নেই। তার দলের ক্ষমতায় থাকারও কোন অভিজ্ঞতা নেই। নিয়মিত দল পরিবর্তন করে এমন কিছু ধনী রাজনীতিবিদের সম্প্রতি দলে জায়গা দিয়ে বেশ সমালোচনার শিকার হয়েছেন ইমরান খান।

কিন্তু এই নেতাদের একটা বিষয় হল যে দলের হয়েই তারা লড়ুক না কেন তারা বিপুল পরিমাণে ভোটার আকর্ষণ করতে পারেন। ইমরান খান তার এই সিদ্ধান্তের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন, এরা হলেন এমন নেতা যারা জানে কিভাবে নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করতে হয়। তারা দলের মতাদর্শকে কলুষিত করবেন না বলে দাবি করছেন তিনি।

তবে কোন দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না বলেই জনমত জরিপে ইঙ্গিত মিলছে। ইমরান খান স্বীকার করেছেন, সেক্ষেত্রে তাকে জোট সরকার গঠন করতে হতে পারে। জারদারি পরিবার পরিচালিত দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি অথবা নওয়াজ শরীফের দলের সঙ্গে জোট গঠন করার সম্ভাবনা তিনি নাকচ করে দিয়েছেন।

ইমরান খান বলেছেন, তাদের সঙ্গে জোট তৈরি করলে, যে উদ্দেশ্য নিয়ে আপনি ক্ষমতায় যাচ্ছেন তা পরাজিত হবে। বিবিসি বাংলা।

এসআইএস/জেআইএম

আরও পড়ুন