ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

বৌদ্ধ মন্দিরে থাই কিশোরদের দীর্ঘায়ু কামনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৪:২২ পিএম, ১৯ জুলাই ২০১৮

থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের গুহা থেকে উদ্ধারের পর উইল্ড বোর ফুটবল দলের সদস্যরা পরিবারের সঙ্গে প্রথম রাত কাটিয়েছে। রাত কাটানোর পর বৃহস্পতিবার সকালের দিকে একটি বৌদ্ধ মন্দিরে সৌভাগ্য কামনা করে প্রার্থনা করেছে।

থ্যাম লুয়াং গুহায় অনাহারে ১৮দিন কাটানোর পর উদ্ধার এই কিশোরদের এক সপ্তাহ ধরে চিয়াং রাই প্রদেশের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। সেখান থেকে বুধবার তারা ছাড়া পায়। গত ২৩ জুন ফুটবল দলের এক সদস্যের জন্মদিন পালনের উদ্দশে প্রবেশের পর হঠাৎ বৃষ্টিতে জলমগ্ন গুহায় আটকা পড়ে তারা। গুহায় আটকা থাকাকালীন শুধুমাত্র বৃষ্টির পানিই ছিল তাদের একমাত্র পানীয়।

বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে কঠোর নিয়ন্ত্রিত এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন এই থাই কিশোররা ও তাদের কোচ। এসময় তারা গুহায় আটকাবস্থার কথা গুণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন। কিশোররা বলেন, ব্রিটিশ ডুবুরিরা তাদের কাছে পৌঁছানোর আগে পর্যন্ত ৯ দিন তারা পাথর কেটে পথ বের করার চেষ্টা করেছেন। পাথর বেয়ে নেমে আসা পরিষ্কার পানি পান করেছেন তারা।

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে প্রথম রাত কাটানোর পর বৃহস্পতিবার সকালে মিয়ানমার সীমান্তের কাছে মায়ে সাইয়ের ওয়াত ফা থ্যাত দোই ওয়াওয়ে বৌদ্ধ মন্দিরে প্রার্থনায় যোগ দিয়েছেন কিশোররা। এসময় তারা দীর্ঘায়ু ও সুন্দর জীবনের প্রার্থনা করেন।

Thai-1

উদ্ধার অভিযানের সময় অক্সিজেন সঙ্কটে প্রাণ হারানো থাই নেভি সিলের সদস্য সুমান গুনানের জন্যও প্রার্থনা করেন উইল্ড বোর ফুটবল দলের সদস্যরা। গুহার সংকীর্ণ পথে উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের জন্য এয়ার ট্যাংক বসানোর সময় অক্সিজেন সঙ্কটে প্রাণ যায় থাই নেভি সিলের সাবেক এই সদস্যের।

সংকীর্ণ জলমগ্ন উঁচু-নিচু পথের কঠিন এই অভিযানে একমাত্র প্রাণহানির ঘটনা ছিল এটি। বিশ্বজুড়ে থাই গুহার এই উদ্ধার অভিযানকে এখন ‘মিশন ইমপসিবল’ হিসেবে বলা হচ্ছে।

গত ২৩ জুন থেকে গুহায় উইল্ড বোর ফুটবল দলের ১২ কিশোর সদস্য ও তাদের কোচ আটকা ছিলেন। ২ জুলাই ৯ দিনের এক অভিযানের পর দুই ব্রিটিশ ডুবুরি গুহার ভেতরে কিশোর ফুটবল দলের সদস্যদের খুঁজে বের করেন। দীর্ঘ প্রায় ৪ কিলোমিটার সংকীর্ণ ও উঁচু-নিচু জলমগ্ন পথ পাড়ি দিয়ে কিশোরদের উদ্ধারে শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান শুরু হয়।

প্রথম দিকে থাই কর্তৃপক্ষ জানায়, গুহায় বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় ও বর্ষা মৌসুমে বর্ষণের কারণে তাদের এখনই উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। আগামী ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের উদ্ধারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

কিন্তু ৮ জুলাই গুহার পানি কিছুটা কমে যাওয়ায় এবং বর্ষণ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর উদ্ধার মিশনের প্রধান ও চিয়াং রাই প্রদেশের গভর্নর ন্যারংস্যাক ওসোত্তানাকর্ন জানান, কিশোরদের উদ্ধারে এখনই উপযুক্ত সময়। ওই দিন প্রথম দফায় চারজন ও পরদিন দ্বিতীয় দফায় চারজনকে উদ্ধার করা হয়। কোচসহ বাকি চারজনকে ১০ জুলাই বের করে আনেন উদ্ধারকারীরা।

Thai-2

বুধবার সংবাদ সম্মেলনে উইল্ড বোর দলের মিয়ানমার বংশোদ্ভূত সদস্য আদুল স্যাম বলেন, ‘এটা ছিল অলৌকিক, আমি অবাক হয়েছিলাম। আমার মাথায় একটা প্রশ্ন ঘুরপাক করছিল, কখন আমরা বাইরে যেতে পারবো। এরমাঝে ব্রিটিশ ডুবুরি জানতে চান, আমরা কেমন আছি। আমি বলেছিলাম, আমরা ঠিক আছি। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আমি কী তোমাকে সাহায্য করতে পারি? তিনি বলেছিলেন, না, ওপরের দিকে যাও।’

থাই এই কিশোরদের মানসিক দিক বিবেচনা করে গণমাধ্যমের সঙ্গে আগামী এক মাস কথা না বলার পরামর্শ দিয়েছে চিয়াং রাই হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এমনকি সংবাদ সম্মেলনেও সাংবাদিকদের কাছে থেকে আগে প্রশ্ন জমা নেয়া হয়। সাংবাদিকেরা যেসব প্রশ্ন করতে চান, সেগুলো প্রথমে জমা দিতে হয়েছে কর্তৃপক্ষের কাছে।

পরে সেসব প্রশ্ন মনোবিদরা যাচাই করে দেখেছেন। কিশোরদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, এমন কোনো প্রশ্ন তালিকায় জায়গা পায়নি। তবে বৃহস্পতিবার থাই কিশোররা যখন মন্দিরে যায় তখনও কিছু গণমাধ্যমকে ছবি তুলতে দেখা যায়।

সূত্র : এএফপি।

এসআইএস/পিআর

আরও পড়ুন