কী কথা হবে তাদের?
সোমবার বৈঠকে বসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউরোপ সফর শেষে প্রথবারের মতো পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। এই বৈঠককে ঘিরে অনেক জল্পনা-কল্পনা তৈরি হয়েছে।
সোমবার ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। তবে ওই বৈঠককে ঘিরে প্রত্যাশা সামান্য বলেই জানিয়েছেন ট্রাম্প। তবে এই বৈঠকের মাধ্যমে ভালো কিছু হতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লেভরভও জানিয়েছেন, তিনিও এ বৈঠক থেকে বেশি কিছু আশা করছেন না।
২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হ্যাকিংয়ের অভিযোগে ১২ রুশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পরই বহু প্রতিক্ষীত এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তবে হ্যাকিংয়ের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া। তবে এই বৈঠকের আনুষ্ঠানিক বিষয়সূচি সম্পর্কে কোনো ঘোষণা আসেনি। তাই কি নিয়ে এই দুই নেতার মধ্যে কথা হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন জানিয়েছেন, ওই বৈঠকের জন্য কোনো বিষয়সূচি নির্ধারণ হবে না বলে দু’পক্ষই সম্মত হয়েছে। ব্রিটেনে রাশিয়ার এক সাবেক গোয়েন্দাকে বিষাক্ত রাসায়নিক প্রয়োগে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, তার এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে যে, প্রেসিডেন্ট পুতিন নির্বাচনে হ্যাকিংয়ের অভিযোগ সম্পর্কে জানতেন না। এ বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করতে পারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এছাড়া রাসায়নিক প্রয়োগের ঘটনাও জানতে চাইবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বোল্টন বলেন, আমরা সিরিয়া নিয়েও কথা বলব। এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অংশ নিয়েও কথা হবে। পাশাপাশি পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিষয়েও আলোচনা হবে।
এই বৈঠকের ব্যাপারে আগাম ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব নয়, তবে মার্কিন উপদেষ্টারা আভাস দিয়েছেন, এখান থেকে বড় কোন ঘোষণা আসার সম্ভাবনা নেই। আরো রহস্য তৈরি হয়েছে যে, দুই নেতা এমন একটি একান্ত বৈঠকে মিলিত হবেন, যেখানে শুধুমাত্র তাদের অনুবাদকরা উপস্থিত থাকবেন।
ধারণা করা হচ্ছে, দুই দেশ হয়তো আবার আগের মতো কূটনৈতিক উপস্থিতি গড়ে তোলার বিষয়ে সম্মত হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে এই বৈঠক অনেক অর্থ বহন করছে। সিরিয়া, ইউক্রেন, ক্রাইমিয়াসহ বিশ্বের অনেক জটিল বিষয়ে পরস্পর বিরোধী অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়া-যার প্রভাব পড়েছে সারা বিশ্বেই।
রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর অবরোধ সারা বিশ্বের জন্যই ক্ষতিকর বলে বর্ণনা করেছেন পুতিন। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশেষ ভাবে এই বৈঠকের ওপর নজর রাখবে। রাশিয়ার হুমকির কারণে তারা কিছুটা অস্বস্তির মধ্যে রয়েছে। আবার অনেক দেশ তাদের জ্বালানির জন্য রাশিয়ার ওপরও নির্ভরশীল।
মধ্য আর পশ্চিম ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহের যে বিতর্কিত নর্ড স্ট্রিম-২ নামের প্রকল্প নিয়েছে জার্মানি, তাকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই রুটে ইউক্রেন, পোল্যান্ড বা বাল্টিক দেশগুলো থাকবে না। ফলে এসব দেশও এই বৈঠকের দিকে নজর রাখবে। সুতরাং সবমিলিয়ে সারা বিশ্বেরই নজর থাকবে সোমবারের এই বৈঠকে আসলে কি হতে যাচ্ছে।
টিটিএন/জেআইএম