রাখাইনে যে অবস্থা দেখে এলেন রেডক্রস প্রেসিডেন্ট
মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশ এসে আশ্রয় নিয়েছেন। এসব রোহিঙ্গা নাগরিককে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক চেষ্টাসহ দেশেটির প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকও করেছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি রাখাইনের উত্তর অংশে যেখানে সহিংসতার কারণে মানুষকে পালাতে হয়েছে সেই এলাকা পরিদর্শন করেছেন ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেডক্রসের (আইসিআরসি) প্রেসিডেন্ট পিটার মাউরা। একই সাথে কক্সবাজারে শরণার্থী ক্যাম্পগুলোও ঘুরে দেখেছেন তিনি।
মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সফরের পর দেয়া এক বিবৃতিতে পিটার মাউরা বলেছেন, রাখাইনে এখনো বিপুল সংখ্যক মানুষের ফেরার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতির কাছে প্রায় ১০ লাখ মানুষ জিম্মি হয়ে আছে।
রাখাইন সফরের বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এক গ্রামে আমি গিয়েছি সেখানে মূল জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশেরও কম এখন সেখান আছে, ৯ হাজারের মধ্যে মাত্র দুই হাজার মানুষ আছে এখন সেখানে। আমি সব সম্প্রদায়ের মানুষের সাথে কথা বলেছি- মুসলিম, রাখাইন ও হিন্দু। তাদের মুখেই শোনা গেছে কিভাবে সামাজিক ব্যবস্থা আর স্থানীয় অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছে, আর কিভাবে তারা দিনের পর দিন মানবিক সাহায্যের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘রাখাইন এখন যারা আছেন তারা খুব ভালো অবস্থানে আছেন এমন দাবি করা যাবে না। যেখান দিয়েই গাড়ি চালিয়ে গিয়েছি সেখানে এক সময় গ্রাম ছিল। সামান্য যা কিছু অবশিষ্ট আছে এখন, তার মধ্যে দ্রুত বেড়ে উঠছে গাছ গাছালি। অন্য জায়গায় স্কুল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো খালি পড়ে আছে, পরিত্যক্ত।’
পিটার মাউরা আরও বলছেন, ‘সংকট সমাধানে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ আমরা সমর্থন করি। মানুষের দুর্দশা লাঘবে আমরা মানবিক সংস্থাগুলো নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু এত কিছুর পরেও সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে তেমন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসেনি।’
বাংলাদেশে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে তাদের নিজ দেশে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ সরকার। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও চাইছে রাখাইনে মর্যাদা সহকারেই ফিরে যাক রোহিঙ্গারা। তবে কবে নাগাদ প্রত্যাবাসন শুরু হবে বা আদৌ হবে কি না তা নিশ্চিত করে কেই বলতে পারছে না। এমনকি রাখাইনে সংকট শুরুর পর সেখানকার পরিস্থিতি দেখার সুযোগ তেমন মেলেনি আন্তর্জাতিক বিশ্বের।
আরএস/পিআর