পর্ন ইন্ডাস্ট্রি গড়তেই নিষিদ্ধ হলো পর্নসাইট!
কথায় আছে মানুষের প্রয়োজন ও পানির স্রোতকে কখনো বাঁধ দিয়ে আটকে রাখা যায় না। এতে হয় বাঁধ ভেঙ্গে যাবে নয়তো বাঁধের ওখানেই পানি জমে নতুন নদীর সৃষ্টি হবে, কারণ স্রোতকে কখনো আটকে দেয়া যায় না।
সম্প্রতি ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকারের সব ধরনের পর্ন সাইট নিষিদ্ধ করার পেছনে দুটি কারণ থাকতে পারে।
প্রথমত, হয়ত এটা প্রাকটিসিং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনেকদিনের দাবি ছিল।
দ্বিতীয়ত, এর পেছনে বাণিজ্যিক কোন কারণ থাকতে পারে। যেমন : আমেরিকা ও কানাডায় পর্নো ইন্ডাস্ট্রি একটি অনেক বড় ইন্ডাস্ট্রি। সারা বিশ্বে এরাই পর্ন মুভি সরবরাহ করে থাকে।
এর থেকে তারা বড় অংকের টাকা উপার্জন করে থাকে। ভারতের বলিউডও অনেক বড় একটি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। এই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িত সকল শিল্পী ও কলা কুশলীদের কথা-বার্তা ও কাজকর্ম গভীরভাবে লক্ষ্য করলে বোঝা যায় ভেতরে ভেতরে এই বলিউড শিল্পীরা যৌনতার বিষয়ে অনেক ‘খোলা মনের’।
কিছুদিন আগে বলিউডের টপ স্টারদের নিয়ে তৈরি ‘AIB’ বা ‘All India Bakchod’ নামের একটি অ্যাপিসোড অনেক বেশি সাড়া ফেলেছিল। যারা ভিডিওগুলি দেখেছেন এবং ভাল ইংরেজি ও হিন্দি বোঝেন তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন এই অ্যাপিসোডে অংশগ্রহণকারীদের ভাষা ও অঙ্গভঙ্গিতে কতটা যৌনতা রয়েছে।
প্রথম সারির শিল্পীরা যারা হাজারো মানুষের সামনে এই ধরনের অভিনয় করতে পারে তারা পর্ন মুভিতে অভিনয় না করলেও তারা যে পর্ন মুভিতে অভিনয় করাকে কোন দিনই খারাপ বলবেন না, সেটা ধরেই নেয়া যায়।
বিগত সালগুলোতে বলিউডে সানি লিওনের সাকসেস ও তাকে নিয়ে মাতামাতি এর উজ্জল প্রমাণ। ভারতের ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিও যদি বলিউডের শিল্পীদের মত যৌনতার বিষয়ে খোলামেলা মনের হয় তবে তাদের হয়তো সুদূরপ্রসারী কোন পরিকল্পনা আছে। আমেরিকা ও কানাডার পর্ন ইন্ডাস্ট্রির বিজনেস ও বলিউড শিল্পীদের যৌনতা বিষয়ে খোলামেলা মনোভাব এবং সেটা দর্শকপ্রীতি পাওয়ার ফলাফল হিসেবে ভারতের ভবিষ্যত মেকাররা হয়ত বা ভবিষ্যতে ভারতের মাটিতে কোন পর্ন ইন্ডাস্ট্রি দেখতে চায়।
সেই লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যেই মোদি সরকারের এই পর্ন সাইট বন্ধ করার উদ্যোগ।কারণ এই বিদেশি সাইটগুলো যাখন সার্ভার থেকে বন্ধ করে দেয়া হবে তখন মানুষ স্বভাবতই এর বিকল্প খুঁজবে। তখন মানুষ আবার ভিসিডি, ভিসিয়ার এবং ডাটা ট্রাভেলারের মাধ্যমে পর্ন ভিডও আদান-প্রদান শুরু করবে। কিন্তু এর যোগান আসবে কোথা থেকে?
বিদেশি সাইটগুলো যদি বন্ধ থাকে তখন নতুন নতুন যোগানের অভাব দেখা দেবে তখন বিভিন্ন ব্যাবসায়ীর আবির্ভাব হবে যারা ভারতের মাটিতে পোপনে পর্ন শুটিং শুরু করে লুকিয়ে ব্যবসা করতে থাকবে। এইভাবে চলতে চলতে একদিন বিষয়টি একরকম প্রকাশ্যে চলতে থাকবে এবং গড়ে উঠবে অসংখ্য ছোট ছোট পর্ন স্টুডিও।
এদের সফলতা এবং এর থেকে প্রচুর মানুষের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা হওয়ায় একসময় ভারতের মাটিতেই স্লোগান উঠবে এদের ব্যবসার ডিসিপ্লিন রক্ষার্থে এবং যত্রতত্র যেন এই কাজ না হয় এবং সরকারের কাছে যেন এর নিয়ন্ত্রণ রাখা হয়।
সেই দিকে লক্ষ্য রেখে এদের কিছু কিছু কোম্পানিকে বিশেষ শর্ত সাপেক্ষে ব্যবসায়িক লাইসেন্স দেয়া হোক। তখন হয়তো সংবিধানের কিছুটা পরিবর্তন করে এদের লাইসেন্স করে দেয়া হবে। এবং এদের হাত ধরেই শুরু হবে পর্ন স্টারদের নিয়ে বাৎসরিক বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান।
প্রথম দিকে অনেক নেতা এইসব অনুষ্ঠানে যাওয়াকে অনুচিত বললেও পাবলিসিটি ও গ্ল্যামারের মোহে অন্ধ হয়ে কয়েক বছরের মধ্যে অনেক বড় বড় ব্যবসায়ী ও সরকারি নেতারা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হয়ে আসতে থাকবেন। তখন তাদের কাছে দাবি তোলা হবে মুম্বাইতে একটি পর্ন ইন্ডাস্ট্রি খোলা আজ সময়ের দাবি।
এভাবে দাবি উত্থাপন হতে হতে একদিন সরকারি অনুমোদনও মিলে যাবে। তখন জুহু বিচের পাশে কোথাও হয়ত বড় গেটের উপরে লেখা দেখা যাবে, ‘WELCOME TO PORN INDUSTRY OF MUMBAI’
লেখক : ব্লগার
এসএইচএস/আরআইপি