প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করলেই জরিমানা
ভারতের মহারাষ্ট্রে শনিবার থেকে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব ধরণের প্লাস্টিকের ব্যবহার। দোকান-বাজার-রেস্তোরায় প্লাস্টিকের ব্যাগ বা বোতল অথবা থার্মোকলের বাসন কোনও কিছুই আর ব্যবহার করা যাবে না ওই রাজ্যে। ধরা পড়লেই বড় অঙ্কের জরিমানা গুনতে হবে। খবর বিবিসি।
ভারতের বড় রাজ্যগুলির মধ্যে মহারাষ্ট্রেই আইন করে প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করেছে সরকার। কাউকে নিষিদ্ধ প্লাস্টিক বহন করতে দেখলেই মোটা অঙ্কের জরিমানা ধার্য করেছে সরকার। প্রথমবারের জন্য ৫ হাজার আর দ্বিতীয়বারের জন্য ১০ হাজার টাকা। তারপরেও একই ব্যক্তি যদি প্লাস্টিক ব্যবহার করে ধরা পড়েন, তাহলে তিনমাসের সাজা ভোগ করতে হবে।
সারা রাজ্যেই কর্পোরেশন আর পৌরসভায় অভিযান চালানো হচ্ছে। শুধু নাসিক, সোলাপুর আর পুনে শহর থেকেই জরিমানা বাবদ শনিবার প্রায় ৮ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। অনেক জায়গায় সাধারণ মানুষকেও জরিমানা করা হয়েছে। তবে মূল অভিযান চলছে দোকান এবং শপিং মলগুলিতে।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস বলেছেন, যদি সবাই সাহায্য করে তবেই রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত সফল হবে। প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ে সবাইকে সচেতন করতে হবে। তবে তার মতে, সরকার সেই সমস্ত প্লাস্টিকের উপরেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যেগুলো আবার ব্যবহার বা পুনরাবর্তন করা যাবে না।
যেসব জিনিসের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে সেগুলি হল, যে কোনও আকারের প্লাস্টিক ব্যাগ, প্লাস্টিকের কন্টেইনার, ডিশ, কাপ, জিপলক পাউচ, ওয়েস্টবক্স, স্টোর লিকুইডের পাউচ, সাজানোর জন্য প্যাস্টিক বা থার্মোকল। তবে বেশ কয়েকটি প্লাস্টিকের জিনিসের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি। সেগুলি হল, দুগ্ধ সামগ্রী, ওষুধ মোড়ার প্লাস্টিক, খাবার প্যাক করার প্লাস্টিক ব্যাগ ইত্যাদি।
রাজ্যের পরিবেশ মন্ত্রী রামদাস কদম বলেন, প্লাস্টিক বাতিল করার আগে মানুষকে প্রচুর সময় দেওয়া হয়েছে। এটা নোটবন্দির মতো রাতারাতি চালু হয়নি। সমুদ্র প্লাস্টিকে বোঝাই হয়ে যাচ্ছে। এটা শুধু মহারাষ্ট্রের জন্য নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্য চিন্তার বিষয়।
মার্চ মাস থেকেই প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার আইন চালু হয়েছিল কিন্তু, আদালতের স্থগিতাদেশের ফলে তা এতদিন কার্যকর করা যায় সম্ভব হয়নি। কিন্তু প্লাস্টিকের ওপর অলিখিত নিয়ন্ত্রণ শুরু হয়ে গিয়েছিল। এই কয়েক মাসে মুম্বাইয়ের অনেক বাসিন্দাই ধীরে ধীরে প্লাস্টিক বর্জন করার অভ্যাস করে ফেলেছেন।
এমনই একজন, মুম্বাইয়ের বাসিন্দা শ্রেয়সী ঘোষ। তিনি বলেন, মুম্বাইয়ের বীচগুলো দেখলেই বোঝা যায় প্লাস্টিক দূষণ কী ভয়াবহ! বর্ষার সময়ে তো এইসব প্লাস্টিকই জমে গিয়ে ম্যানহোল, নালাগুলো আটকে দেয়। এটার খুব দরকার ছিল। প্রথম প্রথম সবারই অসুবিধা হয়েছে। এখন অনেকের মতো আমিও কাপড়ের থলি রাখি সঙ্গে। দোকান-বাজার থেকে জিনিসপত্র তাতেই আনি।
টিটিএন/পিআর