ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

‘ট্রাম্পের কারণে ধর্মীয় বিশ্বাসীদের সংখ্যা বাড়ছে’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ১০:১৪ এএম, ১৭ মে ২০১৮

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে আমেরিকায় ধর্মীয় বিশ্বাসীদের সংখ্যা আবারো বাড়তে শুরু করেছে। আমেরিকায় যদিও ধর্মবিশ্বাসের ব্যাপারটি কিছুদিন আগে থেকেই পরিবর্তিত হতে শুরু করেছে কিন্তু পেন্সের মতে এর পেছনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে।

মিশিগানের ক্রিশ্চিয়ান কনজারভেটিভ ক্যাম্পাসে একটি অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় মাইক পেন্স বলেন, আমেরিকায় ধর্ম বিশ্বাসীদের সংখ্যা আবারো বাড়তে শুরু করেছে। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং আমাদের পুরো প্রশাসন সেসব নীতিতে কাজ করে, যা তোমরা এখানে শিখছ।

তিনি বলেন, প্রতি সপ্তাহে যারা প্রার্থনা করে, চার্চে যায়, বাইবেল পড়ে এবং বিশ্বাস করে- এরকম মানুষের হার কয়েক দশক ধরে একই রকম রয়েছে, যদিও আমেরিকায় জনসংখ্যা অনেক বেড়েছে। এই জাতির প্রতিষ্ঠার সময় যে সংখ্যক মানুষ চার্চে যেতো, এখন জনসংখ্যার অনুপাতে তার চারগুণ বেশি মানুষ ধর্মকর্ম করে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের ধর্ম গবেষণা বিভাগের সহযোগী পরিচালক গ্রেগ স্মিথ বলেন, পেন্সের বক্তব্য আসলে কোন পরিসংখ্যান নির্ভর নয়। যেসব তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে, তাতে এমন কোন ইঙ্গিত পাওয়া যায় না যে, আমেরিকায় ধর্ম বিশ্বাসীদের সংখ্যা বাড়ছে।'

বেশিরভাগ আমেরিকান বলেন যে, তারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে কিন্তু এই সংখ্যাও কমতির দিকে রয়েছে বলে উল্লেক করেন তিনি। স্মিথ বলেন, পেন্স যেমন বলছেন যে, বর্তমান সময়ে অনেক বেশি আমেরিকান প্রার্থনার জন্য চার্চে যাচ্ছেন। কিন্তু পরিসংখ্যান তার এই দাবিকে সমর্থন করে না।

তিনি বলেন, সংখ্যায় কম হলেও, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখেছি যে, চোখে পড়ার মতো করেই ঈশ্বরে বিশ্বাসীদের সংখ্যা আমেরিকায় কমে যাচ্ছে। ব্যক্তিজীবনের চেয়ে ধর্মকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা, প্রতিদিন প্রার্থনা করা, এমনকি নিয়মিতভাবে ধর্মবিষয়ক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া আমেরিকানের সংখ্যা কমতির দিকে রয়েছে।

সোসিওলজিক্যাল সায়েন্সে ২০১৭ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, যারা এখনো গভীরভাবে ধর্মে বিশ্বাস করেন এবং চার্চে যান, তাদেরও প্রতি সপ্তাহেই চার্চে যাওয়ার প্রবণতা কমছে। স্মিথ বলেন, আমেরিকায় নিজেকে নাস্তিক বা ধর্মনিরপেক্ষ বলে চিহ্নিত করা মানুষের সংখ্যা খুব দ্রুত বাড়ছে।

তিনি বলেন, নিজেকে একজন খ্রিষ্টান হিসাবে চিহ্নিত করা আমেরিকানের সংখ্যা কমছে, কারণ ধর্মনিরপেক্ষ বলে পরিচয় দেয়া আমেরিকানের সংখ্যা বাড়ছে। ১৯৯৬ সালে ৬৫ শতাংশ আমেরিকান নিজেকে শ্বেতাঙ্গ খৃষ্টান বলে পরিচয় দিতেন। এক দশক পরে সেই হার কমে এসে দাঁড়িয়েছে ৪৩ শতাংশে।

খ্রিষ্টান রক্ষণশীলদের মধ্যে ট্রাম্প বেশ জনপ্রিয়, বিশেষ করে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে ধর্মবিশ্বাসী মাইক পেন্সকে নির্বাচিত করার পর। তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যেও ধর্ম কেন্দ্রিক বেশি কিছু বিষয় জড়িত রয়েছে। যেমন তিনি অনেক রক্ষণশীল বিচারক নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

গত বছরের জানুয়ারি মাসে তিনি ১৯৮৪ সালের একটি নীতি পুনর্বহাল করেন। সেখানে বলা হয়েছে, যেসব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গর্ভপাতে সহায়তা করবে তারা মার্কিন সরকারের কোন তহবিল পাবে না। নির্বাচনী প্রচারণার সময় দেয়া আরেকটি প্রতিশ্রুতি গত সোমবার বাস্তবায়ন করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। জেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দেয়াও ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ ছিল।

অনেক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী মনে করেন, ইসরায়েলের জন্য সমর্থনের বিষয়টি বাইবেলে লেখা রয়েছে। তারা বিশ্বাস করে, ইহুদি মানুষের জন্য ইশ্বরই ইসরায়েল বরাদ্দ করেছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছেন, আমেরিকার দশজনের ভেতর নয়জন ব্যাপকভাবে ঈশ্বর বা এ ধরণের কোন কিছুতে বিশ্বাস করেন।

কিন্তু পেন্স হচ্ছেন আমেরিকার সেই ৫৬ শতাংশ মানুষের একজন যাদের বাইবেলের প্রথাগত রক্ষণশীল ঈশ্বরে বিশ্বাস রয়েছে। কিন্তু এ ধরণের বিশ্বাসীদের সংখ্যা আমেরিকায় কমে আসছে। আমেরিকায় এখন প্রতি তিনজনের একজন ধর্মের ব্যাপারে আগ্রহী নয় আর প্রতিবছর আমেরিকায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার চার্চ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।'

টিটিএন/আরআইপি

আরও পড়ুন