ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

ইন্দোনেশিয়ায় প্রাণঘাতী হামলার নেপথ্যে কারা?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৫:১৫ পিএম, ১৩ মে ২০১৮

ইন্দোনেশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সুরাবায়ার অন্তত তিনটি গির্জায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত বেড়ে ১১ জনে দাঁড়িয়েছে। হামলায় আহত হয়েছেন আরো কমপক্ষে ৪০ জন। কয়েক মিনিটের মধ্যে তিনটি গির্জায় পর পর হামলার এ ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি।

টেলিভিশনে প্রচারিত খবরে দেখা যাচ্ছে, একটি গির্জার প্রবেশপথে ধ্বংসাবশেষ বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়ায় সম্প্রতি ইসলামি জঙ্গিবাদের পুনরুত্থান দেখা যায়।

ইন্দোনেশিয়ার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষই মুসলিম। তবে খ্রিস্টান, হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীদেরও বসবাস রয়েছে দেশটিতে। ২০০৫ সালের পর দেশটিতে এটাই সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। ওই বছর বালি দ্বীপে তিনটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২০ জনের প্রাণহানি ঘটে।

indonesia

কী ঘটেছিল?

স্থানীয় সময় রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সান্তা মারিয়া ক্যাথলিক চার্চে প্রথম বিস্ফোরণ ঘটে। দেশটির পুলিশের মহাপরিদর্শক মাচফুদ আরিফিন মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেছেন, ‘হামলায় মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছে।’

বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, দ্বিতীয় বোমা হামলার লক্ষ্য হয়েছে পেনটেকোস্টাল চার্চের গাড়ি পার্কিং এলাকা। ছবিদে দেখা যাচ্ছে, বেশ কিছু মোটরসাইকেল পুড়ে গেছে।

এছাড়া তৃতীয় হামলার ঘটনাটি ঘটেছে অন্য একটি চার্চে। যেখানে বোরকা পরিহিত এক নারী শিশুসহ চার্চে প্রকাশের পর বিস্ফোরণ ঘটে। দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, অন্যান্য গির্জায় হামলার চেষ্টা নস্যাৎ করা হয়েছে।

indonesia

হামলায় জড়িত কারা?

এখন পর্যন্ত হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো গোষ্ঠী। তবে ইন্দোনেশিয়ার গোয়েন্দা কর্মকর্তা ওয়াওয়ান পুরওয়ানন্তো বলেন, হামলার পেছনে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের অনুসারী জেমাহ আনসারুত দাওলাহ (জেএডি) জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকেেএকটি হামলার ঘটনার সঙ্গে সর্বশেষ এই হামলার যোগসাজশ রয়েছে ধারণা করছেন তিনি। রাজধানী জাকার্তার উপকণ্ঠে ব্যাপক নিরাপত্তা বেষ্টিত কারাগারে ইসলামি জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর প্রায় ৩৬ ঘণ্টার লড়াই হয়। এতে অন্তত ৫ নিরাপত্তা কর্মকর্তা মারা যান।

এদিকে, পুলিশ বলছে, পশ্চিম জাভার সায়ানজুর এলাকায় সন্দেহভাজন চার জেএডি জঙ্গিকে হত্যা করেছেন তারা।

হামলার পর প্রতিক্রিয়া কেমন?

দেশটির খিস্টান ধর্মের নেতারা শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ইন্দোনেশিয়ার কমিউনিয়ন অব চার্চের প্রধান এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সন্ত্রাসী হুমকির মুখে আমাদের ভীত-সন্ত্রস্ত হওয়ার দরকার নেই। এটাকে নিয়ন্ত্রণের দায়ভার পুরোপুরি সরকারের ওপর ছেড়ে দিতে হবে।’ জাকার্ত পোস্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেটনো মারসুদি গির্জায় বোমা হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন। হামলায় আহত এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও শোক প্রকাশ করেছেন তিনি।

indonesia

ইন্দোনেশিয়ায় জঙ্গিবাদের ইতিহাস কী বলছে?

দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে ২০০২ সালে। ওই বছর বালি দ্বীপের একটি নাইট ক্লাব ও একটি পানশালার বাইরে দুটি বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলার পর দেশটির চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর ওপর ব্যাপক দমন অভিযান শুরু করে কর্তৃপক্ষ।

তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে বেশ কিছু হামলা দায় নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।

২০১৬ সালের জানুয়ারিকে জাকার্তার কেন্দ্রে দফায় দফায় বোমা বিস্ফোরণ ও বন্দুক হামলায় চার বেসামরিক ও চার হামলাকারী নিহত হয়। এর মাধ্যমে আইএস প্রথমবারের মতো দেশটিতে হামলার দায় স্বীকার করে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইয়োগিয়াকার্তার স্লেমানের একটি গির্জায় ছুরিকাঘাতে আহত হয় বেশ কয়েকজন। পুলিশ বলছে, এ হামলাকারী সিরিয়ায় আইএসে যোগদানের চেষ্টা করেছিল।

সূত্র : বিবিসি।

এসআইএস/জেআইএম

আরও পড়ুন